কলকাতা: কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলি চালনার ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানিকেই দায়ী করেছে সিপিএম। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য এবং প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম সাফ জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে এই ঘটনার জন্য দায়ী। তিনি তার সমর্থকদের হিংসার প্ররোচনা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন মুখ্যমন্ত্রীকে অনুশাসনে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। বামফ্রন্ট নির্বাচন কমিশনকে তার প্ররোচনা মূলক মন্তব্য নিয়ে বারবার অভিযোগ জানিয়েছিল।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, রাজ্যে চতুর্থ দফার নির্বাচনে কোচবিহারের শীতলকুচি বিধানসভায় পাঁচজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সকালে একটি ঘটনায় এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। আরেকটি ঘটনায় কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর গুলিতে চারজন নিহত হয়েছেন। কোন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী এভাবে গুলি চালালো তা এখনও সবটা স্পষ্ট নয়। কিন্তু এই কাজ অন্যায় হয়েছে, এভাবে গুলি চালনায় চারজনের মৃত্যুর ঘটনাকে আমরা তীব্রভাবে নিন্দা করছি। মৃতদের পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের দাবি, এই ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করাতে হবে, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গত কিছুদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রধানমন্ত্রী, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারের নামে হিংসার প্ররোচনা দিচ্ছেন। তেমনভাবেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার জন্য দলের কর্মীদের প্ররোচনা যুগিয়েছেন। রাজ্যে মেরুকরণের রাজনীতিকে উসকে দিতে এই পথ নিয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দল। তারা পরিস্থিতিকে কলুষিত করছে। তারই পরিণতিতে রাজ্যে হিংসার ও বিভাজনের বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে। হিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্য গড়ে তুলতে রাজ্যের জনগণের কাছে আবেদন করছি। কেন্দ্রের শাসক দল ও রাজ্যের শাসক দলের বিভাজনের রাজনীতিতে কোচবিহারে আধা সামরিক বাহিনীর গুলিতে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জেলায় জেলায় প্রতিবাদী কর্মসূচি গ্রহণ করতে আহ্বান জানানো হচ্ছে।
প্রত্যেক দফার নির্বাচনের সময়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারে রাজ্যে এসে সভা করছেন। ভোটগ্রহণ পর্ব চলাকালীন তাঁর ভাষণ টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হচ্ছে। এই কাজ নির্বাচনী আচরণবিধি ও নৈতিকতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ইতিপূর্বে আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করেছি এবং নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক ভূমিকা লক্ষ্য করছি না। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের দাবি, ভোটপর্ব চলাকালীন প্রধানমন্ত্রীর সভার সম্প্রচার বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হোক। রাজ্যে অবাধ, শান্তিপূর্ণ, হিংসামুক্ত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেবার জন্যও নির্বাচন কমিশনের কাছে সংযুক্ত মোর্চা দাবি জানাচ্ছে।