naushad
নিজস্ব প্রতিনিধি: কথায় আছে যত গর্জায় তত বর্ষায় না। সেটা ১০০ শতাংশ মিলে গিয়েছে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর ক্ষেত্রে। বিগত তিন চার মাস ধরে বারবার দাবি করেছেন তিনি ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হবেন। সেক্ষেত্রে বাম ও কংগ্রেসের সমর্থন পেতেন তিনি। কিন্তু কোথায় কি? নওশাদ সেখানে প্রার্থী হবেন এমন ঘোষণা এখনও পর্যন্ত হয়নি তাঁদের দলের তরফ থেকে। যদিও নওশাদ বারবার দাবি করছেন দল অনুমতি দিলেই তিনি সেখানে প্রার্থী হবেন। কিন্তু প্রশ্ন, দলের অন্যতম প্রধান মাথা তো তিনিও, তাহলে দল বলতে তিনি কাদের বোঝাচ্ছেন? যথারীতি তৃণমূল বলতে শুরু করে দিয়েছে ভয় পেয়ে গিয়েছেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি এমন সিদ্ধান্তই তিনি নেবেন, তাহলে আগে বিষয়টি নিয়ে এত গলা ফাটিয়েছিলেন কেন? তবে কী আবেগের বশবর্তী হয়েই ওই দাবি করেছিলেন তিনি? এতে যে তাঁর ‘ফেসলস’ হবে সেটা কী অনুমান করতে পারেননি নওশাদ? এই সমস্ত প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ডায়মন্ড হারবার নিয়ে, তা নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে নওশাদকে।
এখনও পর্যন্ত সিপিএম বা কংগ্রেসের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে প্রার্থী ঘোষণা করেনি আইএসএফ। নিজেদের মতো করে আটটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে তারা। অথচ প্রথম থেকেই জোটের পক্ষে সওয়াল করে এসেছেন নওশাদ। কিন্তু নির্বাচন ঘোষণার পরেই তাঁদের উল্টো রূপ দেখা যাচ্ছে। তাঁদের যে বিশ্বাসযোগ্যতা নেই, সেটা দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে বাংলার মানুষের কাছে। তাই ডায়মন্ড হারবারে দাঁড়ানোর কথা বলার পরেও যেভাবে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছে নওশাদ, তাতে তাঁর রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠে গেল।
গত লোকসভা নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবার থেকে ৩ লক্ষ ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন অভিষেক। বিষয়টি নিয়ে নওশাদ দাবি করেছিলেন এই মার্জিন ভেঙেচুরে চুরমার হয়ে যাবে। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল কর্মী- সমর্থকদের একাংশ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন বলে নওশাদ বহুবার সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন। ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অন্তর্গত একাধিক স্থানে গিয়ে সভাও করেছেন নওশাদ। তাতে সত্যিই মনে হয়েছিল অভিষেকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে দেখা যাবে নওশাদকে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বলছে সেটা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই নওশাদ ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে দাঁড়াতে ভয় পেয়ে গেলেন, এই প্রচার যে চলবে, সেটাই কী স্বাভাবিক নয়?