কিয়েভ: ১০ মাস অতিক্রান্ত৷ এখনও যুদ্ধের আগুনে পুড়ছে ইউক্রেন৷ দাঁতে দাঁত চিপে শক্তিধর রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে ভলোদিমির জেলেনস্কির দেশ। আর এই লড়াইয়ের কাণ্ডারী স্বয়ং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি৷ দেশের আর পাঁচটা মানুষের সঙ্গে প্রতিদিন নতুন নতুন যুদ্ধশাস্ত্রে শান দিচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন- এক আন্দোলনকারীকে ফাঁসি! হিজাব বিরোধিতা রুখতে মরিয়া ইরান
গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে লাগাতার হামলা চলছে ইউক্রেনের উপর৷ অনবরত গোলা বর্ষণ। ঝরছে রক্ত৷ কিন্তু জেলেনস্কি ‘দমিবার পত্র নন’৷ সামনে থেকে দাপটের সঙ্গে মাথা উঁচু করে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন৷ এহেন অকুতোভয় এক নেতাই এবার টাইম ম্যাগাজিনের ‘পার্সন অফ দ্য ইয়ার’৷
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশ ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়া। নিমেষে বদলে যায় ইউক্রেনের পরিস্থিতি৷ রুশ হামলায় মাথা নোয়ায় বড় বড় অট্টালিকা৷ ইউক্রেনের আকাশ-বাতাস জুড়ে শুধুই বারুদের গন্ধ৷ রাস্তায় ছড়িয়ে চাপ চাপ রক্তের দাগ৷ ইতি-উতি জ্বলছে আগুন৷ অনবরত মৃত্যু মিছিল৷ এক লহমায় যেন পুড়ে ছাড়খার সাজানো গোছানে কিয়েভ৷ শত চোখ রাঙানির মাঝেও মেরুদণ্ড সোজা রেখেছে জেলেনস্কির দেশ৷ নিজেদের সবটুকু উজার করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। বেশ কিছু সাফল্যও এসেছে। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা৷ পরোক্ষ ভাবে মদত করছে ন্যাটোও৷ সে দেশের সেনারা যেমন মাটি আঁকড়ে লড়াই চালাচ্ছেন, তেমনই কূটনৈতিক মঞ্চে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি৷ বাড়িয়ে চলেছেন দেশবাসীর মনোবল৷ এহেন রাষ্ট্রনেতাকেই এবার বেছে নিল টাইম ম্যাগাজিন৷ টাইমসের সেরা ব্যক্তিত্ব তিনিই।
শুরুতে কিছুটা ধাক্ক সইতে হয়েছিল কিয়েভকে৷ রুশ হামলায় ব্যাকফুটে গিয়েও কী ভাবে স্টেপ আউট করতে হয় তা দেখিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি৷ আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে তিনি এগিয়ে চলেছেন যুদ্ধ জয়ের পথে৷ অন্যদিকে নিজেদের অবস্থানে অনড় রাশিয়াও৷ কোনও মতেই সেনা সরাতে নারাজ৷ উপরন্তু তাদের দাবি, ইউক্রেনের যে অংশ রাশিয়া দখল করেছে, তা রাশিয়ার বলে মেনে নিতে হবে পশ্চিমী দুনিয়াকে। সেই জায়গা থেকে ইউক্রেন লড়ছে। আর জেলেনস্কি বলছেন, শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত এই লড়াই চলবে৷ তাঁদের একটাই মন্ত্র, ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী’!
টাইম ম্যাগাজিন জানাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যে ভাবে বিশ্ব কূটনীতিকে নাড়া দিয়েছেন, তা গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ছেড়ে তিনি সহজেই পালাতা পারতেন৷ কিন্তু, তিনি পাটালনি৷ যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন৷ তাঁর এই মনোভাব প্রশংসা কুড়িয়ে নিয়েছে টাইম ম্যাগাজিনের। যুদ্ধের করুণ পরিস্থিতির মধ্যেও যে ভাবে নিজের দেশবাসীকে বার্তা দিয়ে মনোবল বাড়িয়েছেন তা সকলের নজর কেড়েছে৷ সব দিক বিবেচনা করেই বছরের সেরার সেরা ব্যক্তিত্ব হিসাবে ইউক্রেনের রাষ্ট্রনেতা প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে বেছে নিয়েছে টাইম ম্যাগাজিন৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>