vishnu deo
নিজস্ব প্রতিনিধি: আদিবাসী অঙ্কেই বাজিমাত করলেন বিষ্ণু! অন্যদের নাম নিয়ে বেশি চর্চা হলেও শেষ পর্যন্ত তার নাম চূড়ান্তভাবে ঠিক করলবিজেপি। ঘটনা হল বহু নাম জল্পনায় উঠে এসেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাইকে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিলেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। আদিবাসী সমাজের অন্যতম প্রধান মুখ বিষ্ণু দেও। তাই দৌড়ে থাকলেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে পড়তে হয়েছে ছত্তিশগড়ের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহকে। তাঁর ভাগ্যে এবার শিকে ছিঁড়ল না।
নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণ করে বিজেপি ভালভাবেই বুঝতে পেরেছে ছত্তিশগড়ের তফশিলি জাতি, জনজাতি এবং আদিবাসীদের ভোটের বড় অংশ তাদের দিকে এসেছে। এবারের নির্বাচনে আদিবাসীরা দু’হাত উজাড় করে গেরুয়া শিবিরকে ভোট দিয়েছেন। তাই আদিবাসী অধ্যুষিত এই রাজ্যে এই প্রথম কোনও আদিবাসী সমাজের একজন মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন। যার যথেষ্ট রাজনৈতিক তাৎপর্য আছে বলেই মনে করা হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে গত বিধানসভা নির্বাচনে আদিবাসী ও জনজাতিদের ভোটের সিংহভাগ কংগ্রেস পেয়েছিল বলেই তারা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ছত্তিশগড়ে ক্ষমতায় এসেছিল। সেই ভোট যে এবার কংগ্রেসের পাশ থেকে এভাবে সরে যাবে সেটা কোনও সমীক্ষাতেই আঁচ পাওয়া যায়নি। অধিকাংশ বুথ ফেরত সমীক্ষা ছত্তিশগড়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কথা বললেও প্রায় প্রত্যেকেই কংগ্রেসকে এগিয়ে রেখেছিল। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায় বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আদিবাসী অধ্যুষিত এই রাজ্যে ক্ষমতা দখল করেছে কংগ্রেসকে সরিয়ে দিয়ে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে রবিবার রায়পুরে দলের ৫৪ জন বিধায়ককে নিয়ে বৈঠকে বসেন বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। সেখানে অধিকাংশ বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিষ্ণুর পক্ষে সওয়াল করেন।
১৯৯৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ দু’দশক ধরে ছত্তিশগড়ের রায়গড় লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন বিষ্ণু। কেন্দ্রে ইস্পাত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলেছিলেন প্রথম মোদি সরকারের আমলে। ২০২০-২০২২ সাল পর্যন্ত ছত্তিশগড়ে বিজেপি সভাপতি ছিলেন। এই বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের কুঁকুড়ি আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। অতীতেও এ রাজ্য থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা বহুদিন ধরেই তিনি আরএসএসের সুনজরে রয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিজেপি ক্ষমতায় ফিরলে বিষ্ণুকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত সেটাই হল। সব মিলিয়ে অতীতের অভিজ্ঞতা এবং আদিবাসী মুখ হওয়ার কারণেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন তিনি।