কলকাতা: তিনি সকলের পছন্দের জুন আন্টি। শ্রীময়ী সিরিয়ালের সুবাদে তাঁর পরিচিতি এখন শহরজোড়া। কিন্তু টেলিভিশন জগতের এহেন দাপুটে অভিনেত্রীর নাকি ইংরেজি উচ্চারণ ঠিক সরগর নয়, এমনটাই অভিযোগ করলেন এক নেটিজেন। কী উত্তর দিলেন ঊষসী চক্রবর্তী? অপ্রস্তুত হলেন?
না। ‘দোষ’ অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন পর্দার জুন আন্টি। কিন্তু অপ্রস্তুত হননি মোটেই। বরং ইংরেজি উচ্চারণের অপারগতা নিয়ে গর্বই শোনা গেছে তাঁর উত্তরে। সগর্বেই জানিয়েছেন, “বাংলা মিডিয়াম সরকারি স্কুলের ছাত্রী, ইংরেজি উচ্চারণটা তাই বোধহয় ঠিকমতো শেখা হয়নি।” বস্তুত, ঊষসী চক্রবর্তীর এদিনের দীর্ঘ জবাবটা শুধু একজন ইংরেজি শিক্ষিত নেট নাগরিকের প্রতি ছিল না, ছিল সেই সমস্ত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে যাঁরা শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলা তথা মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দিতে চাননা, যাঁরা মনে করেন জীবনের সাফল্যের পথে একমাত্র চাবিকাঠি ইংরেজি।
টেলি অভিনেত্রী ঊষসী চক্রবর্তীর এই জবাবে নেট মাধ্যমে বেশ শোরগোল পড়ে গেছে ইতিমধ্যেই। তাঁর বাবা ছিলেন স্বনামধন্য বামপন্থী রাজনীতিবিদ। জনৈক নেটিজেন তাঁর উদ্দেশ্যে বলেন,”আপনার ইংরেজি উচ্চারণ খুব সাংঘাতিক।” তিনি তাঁর জবাবে জানান, “আসলে বাবার পয়সা ছিল না ইংরেজি স্কুলে ভর্তি করার আর মতাদর্শগতভাবে বিশ্বাস করতেন সন্তানকে বাংলা স্কুলে পড়াবেন, তাই সরকারি স্কুলে পড়িয়েছিলেন।” তবে ইংরেজি উচ্চারণের সঙ্গে লেখাপড়ার তেমন সম্পর্ক নেই, পরিষ্কার করেছেন জুন আন্টি।
এখানেই থেমে যাননি টেলি অভিনেত্রী। সঠিক ইংরেজি উচ্চারণ ছাড়াও যে উচ্চশিক্ষা এগিয়ে যাওয়া যায়, তা বোঝাতে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে অর্থনীতির স্নাতক হয়েছি। তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। যতটুকু ইংরেজি জানি তাতে স্নাতকোত্তরে ফার্স্টক্লাস পেতে অসুবিধে হয়নি। এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম ফিল করেছি মানবী বিদ্যাচর্চায়। সেখানেও দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিলাম। আপাতত পি এইচ উপরোক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই জমা দিয়েছি। আশা করছি, কিছুদিনের মধ্যেই ডক্টরেট পাব।” নেটিজেনের উদ্দেশ্যে তিনি এও জানিয়েছেন, “এ রাজ্যে এখনও উচ্চশিক্ষা মাতৃভাষায় সম্ভব।” ঊষসী চক্রবর্তীর এই জবাবকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন নেট নাগরিকরা।