কলকাতা: জাতি বা বর্ণের ভিত্তিতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনও ভর্তির প্রক্রিয়া চলতে পারে না৷ আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তির নিয়মে বড়সড় বদলের নির্দেশ দিল সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের রায়ে উচ্ছ্বসিত শেতাঙ্গ আমেরিকান এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বংশোদ্ভূত নাগরিকরা৷ তবে আমেরিকার একটা বড় অংশের আশঙ্কা, আদালতের এই রায়ের ফলে দেশের সংখ্যালঘু এবং আফ্রিকান-আমেরিকানদের শিক্ষার সুযোগ বেশ ভালোমতেই ধাক্কা খাবে। কারণ এতদিন আফ্রিকান-আমেরিকানদের শিক্ষা ব্যবস্থার মবল স্রোতে অন্তর্ভুক্ত করার যে নীতি ছিল, তাতে তাঁরা সহজেই আমেরিকার উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারতেন। সেই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের তীব্র বিরোধিতা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাঁর সাফ কথায়, ‘আদালত যে রায় দিয়েছে, সেটার সঙ্গে আমি একমত নই।’ আদালতের রায়ে হতাশ প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও৷ মার্কিন ইতিহাসের প্রথম অ্যাফ্রো-আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশে এই নিয়ম না থাকত, তিনি কোনও দিনই নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেতেন না।
বৃহস্পতিবার জাতি ও বর্ণের ভিত্তিতে ভর্তির বিপক্ষে নিজের ভেটো দেন প্রধান বিচারপতি৷ তিনি বলেন, ‘জাতিগত সংরক্ষণ অসাংবিধানিক ও বৈষম্যমূলক। কোনও এক সময়ে এই সংরক্ষণের উদ্দেশ্য যথাযথ ছিল৷ তাবলে তা চিরকাল স্থায়ী হতে পারে না। পড়াশোনা এবং মেধার ভিত্তিতেই ছাত্রছাত্রীদের মান বিচার করা দরকার, জাতি-বর্ণের ভিত্তিতে নয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এত দিন এর উল্টোটাই করে এসেছে। এটা আমাদের সংবিধানের পরিপন্থী।’
এর বিপক্ষে মতামত দেন বিচারপতি সনিয়া সতমায়৷ তাঁর যুক্তি, এই নিষেধাজ্ঞা আদতে বাস্তবের সমস্যাকে এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল৷ একে বিচ্ছিন্নতা ও বর্ণান্ধতা বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘জাতিকে উপেক্ষা করলেই সমাজে অসাম্য দূর হবে না। ১৮৬০ সালে যা সত্য ছিল, ১৯৫৪ সালেও তা সত্য এবং আজও তা সত্যই রয়েছে।’