সিভিল সার্ভিসের মতো কঠিন পরীক্ষায় সফল হওয়ার মন্ত্র দিলেন বিজয়ীরা

সিভিল সার্ভিসের মতো কঠিন পরীক্ষায় সফল হওয়ার মন্ত্র দিলেন বিজয়ীরা

 

নয়াদিল্লি: চলতি মাসেই প্রকাশিত হয়েছে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিএসসি) পরিচালিত সিভিল সার্ভিসেস, ২০১৯ পরীক্ষার ফলাফল৷ ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (আইএএস), ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস (আইপিএস), ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস (আইএফএস) এবং সেন্ট্রাল সার্ভিসেসে গ্রুপ ‘এ’ এবং গ্রুপ ‘বি’ পদে মোট ৮২৯ জন প্রার্থীকে নিয়োগ করা হয়েছে৷ সিভিল সার্ভিসে প্রথম হয়েছেন প্রদীপ সিং৷ দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছেন যতীন কিশোর এবং প্রতিভা শর্মা৷ 

ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিসেস বিশ্বের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা৷ এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য এক এক সময় বছরের পর বছর নিজেকে তৈরি করেন পরীক্ষার্থীরা৷ এই বছর সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া এমন কিছু প্রার্থী হলেন শ্রীসান্থ অনুপম (সর্ব ভারতীয় ব়্যাঙ্ক ১৯), ধাত্রী রেড্ডি (সর্ব ভারতীয় ব়্যাঙ্ক ৪৬) এবং পঙ্কজ (সর্ব ভারতীয় ৫৬)৷ তাঁরা বললেন তাঁদের সফলতার মন্ত্র৷ 

আরও পড়ুন- মানচিত্র নিয়ে বিতর্কের পর এই প্রথম নেপালের সঙ্গে বৈঠক কেন্দ্র

 

শ্রীসান্থ অনুপম- ছোট থেকেই সিভিল সার্ভিসেসে সফল হওয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁর৷ বাবা-মায়ের অধরা স্বপ্ন পূরণ করার তাগিদই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে তাঁকে৷ শ্রীসান্থ বলেন, ‘‘ছোট থেকেই সিভিল সার্ভিসেস-এর কথা শুনতাম৷ তখন থেকেই ইতিহাস, সাহিত্য এবং সোশ্যাল সায়েন্সের বই পড়তাম৷’’

ছোট থেকেই মেধাবী শ্রীসান্থ দশমে সারা ভারতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন৷ সিবিএসসি দ্বাদশে জেলার মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন তিনি৷ শ্রীসান্থ বলেন, সমাজের তৃণমূল স্তরে পরিবর্তন আনার গেটওয়ে হল ইউপিএসসি৷ দ্বিতীয় প্রচেষ্টাতেই ইউপিএসসি-তে সাফল্য ধরা দেয় তাঁকে৷ এই সফলতার মন্ত্রী কী? 

শ্রীসান্থ জানান, পরীক্ষার জন্য নিজের আনন্দ-ফূর্তি একেবারে বন্ধ করেননি৷ তবে তা সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন৷ ডি-অ্যাকটিভেট করে দিয়েছিলেন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট৷ পড়াশোনা থেকে বিরতি নিতে কোনও টিভি সিরিজ বা অর্ধেক সিনেমা বরাদ্দ ছিল তাঁর৷ তবে রবিবারটা হালকা ভাবেই কাটাতেন শ্রীসন্থ৷ সিনেমা দেখা, বন্ধুদের সঙ্গ আড্ডা দেওয়া বা ঘুরতে যাওয়া সবকিছুই চলত সেদিন৷ একদিনে তিনটি বিষয় পড়তেন তিনি৷ একটি সকালে, একটি দুপুরে এবং একটি রাতে৷  প্রতিদিন কোন অধ্যায়টি পড়াবেন, তা পরিকল্পনা করে নিতেন৷ আইআইটি চতুর্থ বছর থেকেই কোচিং নেওয়া শুরু করেন৷ দু’বছর ইউপিএসসি-র জন্য কোচিং নেন শ্রীসন্থ৷ তাঁর কথায়, ছোট বেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার নেশাই এই সফলতার অন্যতম চাবিকাঠি৷ 

আরও পড়ুন- বিজেপির ফেসবুক-প্রীতি ফাঁস! প্রাণে মারার হুমকি পেলেন মহিলা আধিকারিক

 

ধাত্রী রেড্ডি- ইউপিএসসি-তে ধাত্রীর সর্বভারতীয় ব়্যাঙ্ক ৪৬৷ তাঁর অনুপ্রেরণা ছিলেন ড. কিরণ বেদী৷ লক্ষ্য ছিল আইপিএস৷ তবে এর আগে জেইই পাশ করে আইআইটি খড়গপুর থেকে বি-টেক করেন৷ ফাইনাল ইয়ারে থাকার সময় খাদ্য অপচর রুখে খুদার্থদের মুখে আহার তুলে দিতে যোগ দেন ‘ফিড ইন্ডিয়া’ নামে একটি এনজিও-তে৷ এক বছর পর চাকরি ছেড়ে শুরু হয় ইউপিএসসি’র প্রস্তুতি৷ তৃতীয় বারের চেষ্টায় সফল হন তিনি৷ সব রকম বিনোদন ভুলে গোটা এক বছর মন দিয়ে পড়াশোনায় করেন তিনি৷ দিনে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন৷ প্রথমবারের ব্যর্থতা থেকে অনেকটা শিক্ষা নিয়েছিলেন তিনি৷ ইউপিএসসি মেন পাশ করে যোগ এখন তিনি যোগ দিয়েছেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ন্যাশনাল পুলিশ অ্যাকাডেমি, হায়দরাবাদে৷ 

 

পঙ্কজ- সকালে যোগা আর তার পর ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পড়াশোনা৷ পড়ার মাঝে মাঝে গান শোনা৷ এটাই ছিল পঙ্কজের মন্ত্র৷ তিন বছর পরিশ্রমের পর তিনি সফল৷ সিভিল সার্ভিসেসে তাঁর ব়্যাঙ্ক ৫৬৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen + 7 =