type 2 diabetes
কলকাতা: বিশ্বের প্রথম দশ দূষিত শহরের তালিকায় ইতিমধ্যেই নাম লিখিয়ে ফেলেছে ভারতের তিন মেট্রো সিটি দিল্লি, মুম্বই এবং কলকাতা। দূষণের কালো ছায়া গ্রাস করেছে এই শহরগুলিকে। মূলত কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বায়ু দূষণ। শব্দ আর জল দূষণেও খুব একটা পিছিয়ে নেই ভারতের এই তিন শহর। তবে বায়ুদূষণের বিষ গিলে খাচ্ছে শহরগুলিকে। বায়ুদূষণের কারণে বাড়ছে হাঁপানি, ক্যানসার, অ্যালার্জির মতো অসুখ৷ যদিও এ কথা এখন আর কারও অজনা নয়৷ তবে এই তালিকা দীর্ঘ করে তাতে জুড়ল টাইপ টু ডায়াবেটিস। দীর্ঘ সাত বছর ধরে দুই শহরে সমীক্ষা চলানোর পর উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য৷
এই সমীক্ষাটি চালিয়েছে আট জনের একটি দল৷ গবষেকদের সেই দলের নেতৃত্বে ছিলেন এক বাঙালি৷ তিনি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সিদ্ধার্থ মণ্ডল। সম্প্রতি বিএমজে ওপেন ডায়াবেটিস রিসার্চ অ্যান্ড কেয়ার জার্নালে তাঁদের সেই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, শহরের বাতাসে থাকা বিপুল পরিমাণ দূষিত পিএম ২.৫ ধূলিকণার জেরে ঘরে ঘরে ঢুকে পড়ছে এই ‘নিঃশব্দ মহামারি’। গবেষকরা জানাচ্ছেন, চুলের চেয়েও ৩০ গুণ সূক্ষ্ম পিএম ২.৫ ধূলিকণা নিশ্বাসের সঙ্গে ঢুকে পড়ছে মানব দেহে। যা উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ। আর তাতেই বাড়ছে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি।
সিদ্ধার্থ মণ্ডল ও তাঁর টিম ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রাজধানী দিল্লি এবং চেন্নাইয়ে অন্তত ১২ হাজার মহিলা ও পুরুষের উপর সমীক্ষা চালিয়েছেন। তাঁরা দেখেছেন, বাতাসে পিএম ২.৫ ধূলিকণা মনব শরীরে প্রবেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রক্তে বাড়তে শুরু করে শর্করার পরিমাণ৷ এর ফলে একজন মানুষ খুব সহজেই ডায়াবেটিস আক্রান্ত হন৷ সেই সঙ্গে বাড়ছে ব্লাড প্রেশারের সমস্যাও।
দিল্লির সেন্টার ফর ক্রনিক ডিজিজ কন্ট্রোলের গবেষক সিদ্ধার্থ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘রক্তে শর্করার বাড়বাড়ন্ত মানুষকে ধীরে ধীরে ডায়াবেটিসের দিকে ঠেলে দেয়। একেই ভারতীয়দের মধ্যে লো বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) এবং ফ্যাটের আধিক্য রয়েছে৷ এর ফলে ডায়াবেটিসের আশঙ্কা আরও বেড়ে যাচ্ছে।’’
দূষণের সঙ্গে টাইপ টু ডায়াবেটিসের যোগসূত্র কোথায়? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দূষিত পরিবেশে বাতাসে নানা ধরনের ধূলিকণা মিশে থাকে। তার মধ্যে ২.৫ মাইক্রনের থেকেও ছোট কণা শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে রক্তে ঢুকে পড়ে। ওই অতিসূক্ষ্ম কণা লাগাতার বিপুল পরিমাণে শরীরে ঢুকতে থাকলে প্রদাহ তৈরি হয়। এতে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রক ইনসুলিন কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বহুগুণ বেড়ে যায়৷ চিকিৎসকদের পরামর্শ, বাতাসে ভাসমান অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা আটকাতে ভরসা করোনাকালের সেই এন৯৫ মাস্ক৷