কলকাতা: লাফিয়ে বাড়ছে করোনা৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন৷ বৈঠকের আগে রাজ্যে বাকি থাকা নির্বাচন একদিনে করার দাবি জানাতে চলেছে তৃণমূল৷ তৃণমূলের যুক্তি, ৪ দিনের পরিবর্তে এক দফায় বাকি নির্বাচন করা গেলে করোনার প্রকোপ কমানো যেতে পারে৷
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন৷ সেই বৈঠকেই বেশ কিছু প্রস্তাব দিতে চলেছে তৃণমূল৷ বাংলায় ৮ দফার নির্বাচনের দিন ঘোষণার হওয়ার পর থেকেই আপত্তি জানিয়েছিল তৃণমূল৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উষ্মা প্রকাশ করেন৷ এখন এই পরিস্থিতিতে বাকি দিনের ভোট এক দফায় করার প্রস্তাব দিতে চলেছে তৃণমূল৷ অন্যদিকে, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে শিক্ষা দিয়ে বড় জমায়েত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামফ্রন্ট৷ বড় জমায়েত এড়িয়ে ছোট ছোট মিছিল-মিটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামফ্রন্ট৷
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, শুক্রবার দুপুর দুটোয় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে এই বৈঠক হবে৷ প্রতিটি রাজনৈতিক দল থেকে একজন করে প্রতিনিধিত্ব করবেন৷ এছাড়াও জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার ও কমিশনারেটকে নির্বাচনী প্রচারে কোভিড প্রক্রিয়া মেনে চলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নির্বাচন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কমিশন সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবর৷ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব সহ অন্যান্য আধিকারিকরা আগামী শুক্রবার ১০টি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই বৈঠক করবেন বলে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে৷ পাশাপাশি জেলাস্তরে নির্বাচনি প্রচারে করোনা বিধি মেনে চলার জন্য জেলা নির্বাচনী আধিকারিক এবং পুলিশ সুপারদের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে সর্বদলীয় বৈঠক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ নির্বাচনী প্রচারে কোনভাবেই করোনা বিধি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে৷
রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের বাকি দফাতে করোনা সংক্রমণ রুখতে নির্বাচন কমিশনের জারি করা বিধিনিষেধ কঠোর ভাবে পালনের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণনের ডিভিশন বেঞ্চ এই নিয়ে দায়ের হওয়া এক জনস্বার্থ মামলার রায়ে স্পষ্ট জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচার হোক বা অন্য যে কোনও ক্ষেত্র বড় ভিড় এড়াতে হবে৷ প্রচার সভা বা কর্মসূচিতে যাতে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় না হয়, জেলাশাসক এবং রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিককে দায়িত্ব নিতে হবে৷ করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে দায়ী থাকবে নির্বাচন কমিশন৷ ফলে, অবিলম্বে কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন৷
যদি কোথাও করোনা বিধি ভঙ্গ হয়, তার জন্য জেলাশাসক ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ থাকবেন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে আদালত৷ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ তার রায়ে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, কোনও মতেই করোনাবিধি ভঙ্গ করা যাবে না। প্রতিটি রাজনৈতিক দলকেই ভোটপ্রচার করতে হলে তার সঙ্গেই করোনা সচেতনতা ব্যবস্থা করতে হবে৷ প্রয়োজনে লিফলেট বিলি করতে হবে৷ প্রত্যেকের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে বলা হয়েছে৷ ভোটকেন্দ্রে স্যানিটাইজার ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক ভাবে রাখতে হবে বলে আদালত তার নির্দেশে জানিয়েছে৷ হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর কমিশনের এই বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে৷ কেননা, এমনিতেই লাফিয়ে বাড়ছে করোনা৷ বাংলা-সহ গোটা দেশজুড়ে বাড়ছে করোনার তাণ্ডব৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে কমিশনের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷