বঙ্গধ্বনি যাত্রায় ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’! রাজপথে আদি বনাম যুব তৃণমূলের মিছিলে বিতর্ক!

বঙ্গধ্বনি যাত্রায় ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’! রাজপথে আদি বনাম যুব তৃণমূলের মিছিলে বিতর্ক!

তমলুক: বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে সরকারের ১০ বছরের কর্মকাণ্ডের রিপোর্টকার্ড প্রকাশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সেদিনই রাজ্যজুড়ে বঙ্গধ্বনি যাত্রার ডাক দেওয়া হয়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকারের ১০ বছরের উন্নয়নের কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের দরবারে পৌঁছে দিতেই এই কর্মসূচির ডাক দেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷  তারমধ্যে শুক্রবার প্রথমদিনেই বঙ্গধ্বনি যাত্রাকে কেন্দ্র করে গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে। একদিকে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তিলক কুমার চক্রবর্তীর ডাকে মিছিল হয়, অন্যদিকে মহিষাদলা ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহসভাপতি রামকৃষ্ণ দাসের ডাকে অপর একটি মিছিল হয়। যদিও তাতে গোষ্ঠীকোন্দলের তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছেন তিলক কুমার চক্রবর্তী৷ তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত জায়গায় সমস্তরকম ভাবেই মিছিল করতে বলা হয়েছে। যুব, ছাত্র থেকে শুরু করে মূল সংগঠন, সকলেই মিছিল করতে পারে। কোনও অসুবিধা নেই। আমরা এই প্রচার তুঙ্গে তুলতে চাইছি। আমরা প্রচার করতে চাইছি, যে কেউ এর প্রচার করতে পারে।’’ একাধিক সংগঠন আলাদাভাবে মিছিল করলে দলের লাভ হবে বলে দাবি করেন তিনি৷

অন্যদিকে, মহিষাদলেই অপর একটি মিছিল হয় ব্লকের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহ সভাপতি রামকৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে। তিনি বলেন, “বিধায়ক আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশেই আমরা এই মিছিল করছি। আর কে কোথায় মিছিল করছে, সেটা আমাদের বলার বিষয় নয়। যাঁরা মিছিল করছেন, তাঁরা বলবেন, তাঁরা বুঝবেন। বিধায়ক যেহেতু আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, আমাদের বিধায়ককে সামনে রেখেই মিছিল করার কথা ছিল। সেই জন্য তাঁর নির্দেশে আমরা এখানে মিছিল করছি। আর কোথায় কী হচ্ছে সেটা, আমাদের জানা নেই।” তাহলে কি বিধায়ক সুদর্শন ঘোষ দস্তিদারকে অমান্য করেই মিছিল করছে মহিষাদল ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের মূল সংগঠন? সে সম্পর্কে অবশ্য স্পষ্ট করে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রামকৃষ্ণ দাস।

এদিকে, তৃণমূলের দুই পৃথক সংগঠনের মিছিলকে রাজ্যের শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হিসেবেই দেখছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতা তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস দ্বিধাবিভক্ত, এই রাজনৈতিক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরম, তা প্রকাশ্যে এসেছে। সেইজন্যই একদিকে যুব সংগঠনের মিছিল, অন্যদিকে তৃণমূল নেতার মিছিল৷  রিরোটকার্ডের নামে যে মিথ্যাচার, তা জনগণ ধরে ফেলেছে। বিগত ১০ বছর ধরে রাজ্যে খুন, হিংসা সন্ত্রাস ছাড়া উন্নয়নের কোনও ছিঁটেফোঁটাও করেনি তৃণমূল কংগ্রেস। আমাদের পূর্ব মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলায় উন্নয়নের কোনও কাজ নেই।” তবে তৃণমূলের এই গোষ্ঠীকোন্দলের তত্ব খারিজ করে দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের ব্লক সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিজেপির কথা যত না বলা যায় ততই ভাল। বিজেপি বাংলায় যে খোয়াব দেখছে, ২৯৪টি আশনে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচন, ভোটে জিতলে প্রমাণ হয়ে যাবে, আবার তৃণমূল কংগ্রেস প্রচুর আসন পেয়ে বাংলার দায়িত্বে আসবে।’’ বিভিন্ন জেলা সফরে গিয়ে দলের নেতাদের একজোট হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নেতারা সেদিকে যে কর্ণপাত করছেন না, মহিষাদের ঘটনা ফের তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − 7 =