কোচবিহার: শিয়রে বিধানসভা নির্বাচন। ভোটের ঢাকে কাঠি পড়তে না পড়তেই নিজেদের ভোটবাক্সের ওজন সুনিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছে বাংলার প্রতিটি রাজনৈতিক শিবির। আর তার মধ্যেই বাংলার নতুন ‘ট্রেন্ড’ হয়েছে দলবদল। কোনও নেতা হেঁটেছেন এপক্ষ থেকে ওপক্ষের পথে, তো কোনও বিধায়ক সব ছেড়েছুড়ে অন্য শিবিরের শামিয়ানায়। তবে সবকিছুর প্রতিফলন সবাই যেন রেখে চলেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। নিজেদের আধুনিক ও ডিজিটাল প্রমাণ করতে যেন মরিয়া সকলেই।
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আজ চটজলদি পৌঁছে যাওয়া যায় লক্ষাধিক সাধারণ ভোটারের চোখের সামনে। তাই প্রিয় কিংবা অপ্রিয়- সকল নেতা’র মন বুঝতে আজকাল যেন সমস্যা হয়না কারো। তাই অফিস থেকে বাস কিংবা শপিং মল থেকে চায়ের দোকান- সব জায়গাতেই একই আলোচনা, কোন নেতা কোন শিবিরে চলেছেন। আর এসবের মাঝেই তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সব সহ্যের সীমার বাইরে, ভাবার সময় হয়েছে।’ তাহলে কি তিনিও দল বদল করবেন? এই জিজ্ঞাসাকে তিনি অবশ্য নিজেই নাকোচ করেই উড়িয়ে দিয়েছেন সমস্ত জল্পনা।
তাহলে এমন পোস্টের মানে কি? শুধুই কি একটা ফেসবুক স্ট্যাটাস নাকি নেপথ্যে কিছু গুঞ্জন রয়েছে? এই প্রসঙ্গে বিধায়কের মন্তব্য, ‘কারণ আছে তাই লিখেছি।’ আর এখানেই সূত্রপাত মূল জল্পনার। বেশ কিছুদিন আগে পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়েছেন তৃণমূল নেতা মিহির গোস্বামী। তার ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই তৃণমূলের দরজায় আরেক টোকা। এবার কি তবে উদয়ন? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নটা উঠছে বিভিন্ন মহলে। এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, দলের মধ্যে বাড়ছে অশান্তি, ঘটছে অনুশাসনের অভাব, তাই এই অসহ্য অবস্থার যাঁতাকলে পড়েই এই পোস্ট। যদিও পরে তাঁর ফেসবুক নিস্ক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে৷
আর এসবের মাঝেই শোনা যাচ্ছে, কোচবিহারে উদয়ন-পার্থপ্রতিম জুটির বিরোধীগোষ্ঠী রবীন্দ্রনাথ-বিনয়কৃষ্ণ জুটি। আর এই নিয়ে ওই এলাকায় রাজনৈতিক চাপানউতর চললেও সেখানের মানুষ এই গোষ্ঠীদ্বন্দের কথা মানতে নারাজ। তবে তৃণমূল হাই কমান্ডে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় একটা সূক্ষ্ম ফাটলের ইঙ্গিত যে ছিল, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। তাহলে কি সেই অন্দরের অশান্তির কারণেই উদয়নের এমন ইঙ্গিতপূর্ণ ফেসবুক স্ট্যাটাস? গুঞ্জনের শব্দটা ক্রমশ কোচবিহারের রাজনৈতিক পরিসরে বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ আর এই গুঞ্জনের মাঝেই দলবদলের কালো মেঘ ফের দেখা যাচ্ছে ঘাসফুলের আকাশে।