কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের বিজেপির উত্থান দেখে দলের ড্যামেজ কন্ট্রোলে ডাকা হয়েছিল তাঁকে৷ কিন্তু কন্ট্রোল তো দূর, উল্টে ভাঙন অব্যাহত৷ পিকের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বহু নেতা৷ ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দলত্যাগ করছেন বহু নেতা৷ শুভেন্দু অধিকারী থেকে শীলভদ্র, দলত্যাগীদের তালিকা দীর্ঘ৷ রয়েছেন বিধায়ক-সাংসদ৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সূত্রের খবর, সেখানে সরাসরি ভোটকুশলী পিকের দল ভাঙনের প্রসঙ্গে কাঠগড়ায় তোলা হয়৷ সরাসরি নেত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়েন প্রশান্ত৷
সূত্রের খবর, কালীঘাটের কোর কমিটির বৈঠকে নেত্রী পিকের কাছে সাফ জানতে চান, ভোটের মুখে কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে? সমস্যাটা ঠিক কোথায়? আপনার কী মনে হয়? জবাব নিয়ে তৈরি ছিলেন পিকে৷ জানান, বিজেপি বিভিন্ন সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে ভয় দেখাচ্ছে৷ তাতে অনেকে ভয় কিংবা লোভে পড়ে চলে যাচ্ছে৷ পাল্টা নেত্রীব জানান, দেখুন, বাকিরা যাঁরা আছেন, তাঁদের বোঝান৷
সূত্রের খবর, এদিন কালীঘাটের তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের যে বৈঠক হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, যারা দল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন তারা আদতে দলের বোঝা। তারা বেরিয়ে যাবার জন্য একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের ভালো হচ্ছে, তাই দল একেবারেই উদ্বিগ্ন নয় এই ব্যাপারে। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, কে গেল আর কে থেকে গেল তা নিয়ে দল একেবারেই চিন্তিত নয়, বরং যারা আছেন তাদের নিয়েই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ঝাঁপাতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। একই সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের মূল এজেন্ডা হতে চলেছে উন্নয়ন। সেটিকে সামনে রেখেই ২০২১ নির্বাচনী কোমর বেঁধে নামতে চলেছে ঘাসফুল শিবির। এই প্রসঙ্গে কোন রাজনৈতিক দলকে এক ইঞ্চি জায়গা না ছাড়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে কালীঘাটের এই বৈঠক থেকে।
প্রসঙ্গত, মন্ত্রিত্ব এবং বিধায়ক পদ থেকে শুভেন্দু অধিকারী ইস্তফা দেওয়ার পরেই পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত। একইসঙ্গে ইস্তফা দিয়েছেন আসানসোলের পৌর প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। একই সঙ্গে একাধিক জেলার একাধিক বিধায়ক পদত্যাগ করেছেন একইসঙ্গে অনেকে এমন রয়েছেন যারা বেসুরো কথা বলছেন ইতিমধ্যেই। সব মিলিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস যে ভালোমতো চাপে রয়েছে তা বলাই বাহুল্য। তবে তারা যে কোনভাবে আত্মবিশ্বাস হারাচ্ছে না তাই দিনের বৈঠকের বার্তা দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। একই সঙ্গে তৃণমূলের শিবিরের দাবি, বাংলার মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে রয়েছেন এবং তাদের উন্নয়নের সাক্ষী। তাই যদিও বারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।