করোনার কোপে বাঙালির ‘দীপুদা’, সমুদ্র-পাহাড়ে শ্মশানের নিস্তব্ধতা

করোনার কোপে বাঙালির ‘দীপুদা’, সমুদ্র-পাহাড়ে শ্মশানের নিস্তব্ধতা

কলকাতা:  ভ্রমণপিপাসু বাঙালি পর্যটনের নেশায় চিরকালই বুঁদ৷ কিন্তু করোনার দাপটে দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকতে হয়েছে তাঁদের৷ এরপরে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই ফের বাক্স-প্যাঁটরা নিয়ে বেড়িয়ে পড়া৷ কিন্তু আবারও সঙ্গীন করোনা পরিস্থিতি৷ এই অবস্থায় ভাটা পড়েছে পর্যটন শিল্পে৷ 

আরও পড়ুন- ভোট গণনার পর কোথাও হবে না বিজয় মিছিল, নিষেধাজ্ঞা কমিশনের

এককথায় বলতে গেলে বাঙালির প্রিয় ভ্রমণ স্থান  ‘দীপুদা’৷ ‘দী’ মানে দীঘা, ‘পু’ মানে পুরী আর ‘দা’ বলতে দার্জিলিং৷ এই তিনটি স্থান গরমে বাঙালির অন্যতম ডেস্টিনেশন৷ কোভিডের প্রথম ধাক্কা সামলে বাঙালির পায়ের নীচে সরষে গুলো ফের যখন নড়ে উঠছিল, তখনই আছড়ে পড়ল সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ৷  সেই ঢেউয়ে ফের নিঃসঙ্গ ‘দীপুদা’৷ ভক্তদের জন্য ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পুরীর জগন্নাথ দেবের দরজা৷ পাহাড়ের হাতছানিতেও আর সাড়া দেওয়ার উপায় নেই কারও৷ তাই পাহাড়ের কোলও প্রায় ফাঁকা৷ করোনার কোপে ফের ধরাশায়ী পর্যটন শিল্প৷ লকডাউন না হলেও পাহাড় একেবারে শুনসান৷ দেখা নেই পর্যটকের৷ আবারও ভাঙতে শুরু করেছে অর্থনীতি৷ 

এক ট্যুর অপারেটর বলেন, গতবছরের মতোই পরিস্থিতি হয়ে গিয়েছে৷ মে-জুন মাসে যত বুকিং ছিল সব বাতিল হয়ে গিয়েছে৷ এপ্রিলের শেষের দিকে দার্জিলিং, কালিম্পংয় এমনকী ভুটানে খুবই ভিড় থাকে৷ এখন ভিড় একেবারে শূন্য৷ নিউ জলপাইগুড়ি বা বাগডোগরা বিমানবন্দর, কোথাও কোনও পর্যটক নামছেন না৷ হোটেল মালিক থেকে লোকাল গাইড, ট্যাক্সি চালক, করোনার কোপে সকলের অবস্থাই সঙ্গীন৷ এক হোটেল মালিক বলেন, দার্জিলিং পর্যটন শিল্পের উপরেই নির্ভরশীল৷ কিন্তু করোনার প্রকোপে পর্যটনে প্রভাব পড়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে আগামী ২৯ এপ্রিল জিটিএ-র সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা৷ 

আরও পড়ুন- জোড়া ভূমিকম্পে কাঁপল বাংলা, তীব্রতা ছিল ৬.৪

অন্যদিকে, দার্জিলিং থেকে প্রায় হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিতি পুরীর সমুদ্রেও মিশেছে করোনার বিষ৷ পুরীর নীল জলরাশি আর জগন্নাথ দেবের টানে এখানে ছুটে আসেন বহু মানুষ৷ কিন্তু আগামী ১৫ মে পর্যন্ত মন্দির বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ৷ করোনা রেহাই দেয়নি সমুদ্র শহর দীঘা-মন্দারমনিকেও৷ যে দীঘার সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জনকে হার মানায় মানুষের কোলাহল, সেই দীঘা- মন্দারমনিতে শ্মশানের নিস্তব্ধতা৷ কয়েকজন পর্যটকের দেখা মিললেও, তা কার্যত হাতে গোনা৷ দীঘার এক হোটেল মালিকের কথায়, এখানে অলিখিত লকডাউন চলছে৷ এই সময় দীঘায় ভিড় সামাল দেওয়া যায় না৷ কিন্তু করোনার জেরে পর্যটকের দেখা নেই৷ আমাদের অবস্থাও খুব খারাপ৷ সরকারের কাছে একটাই আবেদন তারা যেন কোনও ব্যবস্থা নেয়৷ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − nine =