কলকাতা: সিপিএমের আমলে শিক্ষা 'অনিলায়নের' প্রভাব মুক্ত হতে পারেনি – এই অভিযোগ বহু পুরান৷ তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে রাজ্যের শিক্ষা যেন 'পার্থপ্রতিম' – এই অভিযোগ গুরুতর ভাবে উঠতে শুরু করেছে৷ শিক্ষার বিভিন্নস্তরে 'দলদাস' দের নিয়োগ করে কুখ্যাত হয়ে উঠেছিল বাম শিক্ষা ব্যবস্থা৷ সিপিএমের তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের নির্দেশের দলদাস শিক্ষাবিদরা বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ব বিদ্যালয়ের মাথায় স্থান পেতে থাকেন৷ সেখানে যোগ্যতার তুলনায় লাল ঝান্ডার আনুগত্যই মানদণ্ড হয়ে দাঁড়ায়৷
রাজ্যে 'তথাকথিত' পরিবর্তনের পরেও যে সেই ধারা অপরিবর্তিত রয়েছে তা কয়েকটি 'নিয়োগ' দেখেই প্রমাণিত৷ নিযুক্ত ব্যক্তিদের যোগ্যতা যে কতটা তা অবশ্যই তর্কযোগ্য৷ কিন্তু, তাঁদের নিয়োগ যে প্রশ্নের উর্ধে নয়, তা বলাই যেতে পারে, কারণ – তৃণমূল ছাত্রপরিষদের এই নেতা-নেত্রী বৃন্দ নাকি দলকে সেবা করার পুরস্কার পেলেন, গুঞ্জন সর্বত্র৷
পরপর অনেক অভিযোগ রয়েছে৷ এই সারিতেই প্রথমে আসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন সভানেত্রী জয়া দত্তের নাম৷ জয়া 'ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি'র সহকারী-রেজিস্টার পদে যোগ দিতে চলেছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে৷ বিরোধীরা তীব্র অভিযোগ জানিয়েছেন৷
যদিও জয়া নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছেন কিনা তা পরিষ্কার নয়৷ জয়া নিজেও ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন৷ তিনি নাকি বলেছেন, ওই পদে যোগ্যব্যক্তি হিসাবেই যোগ ইন্টারভিউ দিয়েছেন তিনি৷ তবে, তিনি নিয়োগপত্র পাননি৷ তাই, মন্তব্য করা সম্ভব নয়৷ এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর থেকেই খবর রটেছে, জয়াই পরবর্তী সহকারী রেজিস্ট্রার৷
তবে শুধু জয়া-ই নয়, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বেশ কিছু নেতানেত্রী সরকারি চাকরির নিয়োগ সন্দেহ জনক ঠেকেছে এবং তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কও হয়েছে৷ উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ের এক এসিস্টেন্ট প্রফেসর, সংস্কৃত কলেজের এক এসিস্টেন্ট প্রফেসর, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূর শিক্ষা বিভাগে এক এম বি এ ফ্যাকাল্টি, কলকাতার একটি নাম করা কলেজে হেড ক্লার্ক এবং একাউন্ট অফিসার নিয়োগ, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক টেকনিক্যাল এসিস্টেন্ট'দের নিয়োগ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে৷ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট এরা সকলেই৷ যেমন জয়া দত্ত৷ টাকা নিয়ে ভর্তির দুর্নীতির অভিযোগ তুঙ্গে ওঠায় তৃণমূল জয়াকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়৷ কিন্তু, অনেকেই বলেন, দলের সঙ্গে তার সম্পর্ক খারাপ হয়নি৷ সেক্ষেত্রে, যারা চাকরি পেয়েছেন তারা সকলেই রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট৷ বিতর্কের মাঝে আলোচনায় উঠে এসেছে 'পার্থপ্রীতিম শিক্ষা ব্যবস্থা'র কথা৷