কলকাতা: তৃণমূলের জমি আন্দোলনের চাপে আগেই বাংলা ছেড়েছিল টাটা৷ কারখানা নির্মাণ করার পরও হয়নি একলাখি গাড়ি ন্যানোর উৎপাদন৷ কোটি-কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা কারখানা দেওয়া হয়েছিল গুঁড়িয়ে৷ কার্যত সেদিনই ভাঙা হয়েছিল রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনার ভবিষ্যৎ৷ সিঙ্গুর থেকে টাটা চলে যাওয়ার পর বাংলায় নতুন কোনও ভারী শিল্প এসেছে কি না, তা কমবেশি জানেন বাংলার সাধারণ জনতা৷ সিঙ্গুরে টাটার তৈরি কারখানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর, এবার ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই জমিতে কৃষির পাশাপাশি শিল্প গড়ার কাজ শুরু করল তৃণমূল সরকার৷ বর্তমানে, সিঙ্গুরে টাটার পরিত্যক্ত জমির বেশিরভাগ অংশে না হয় চাষ, না হয় বাস, অভিযোগ জমির মালিকদের৷
দেশের শিল্প মানচিত্রে বাংলার ‘হৃত গৌরব’ ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছিল প্রক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ ‘কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’ এই স্লোগান তুলে সিঙ্গুরে টাটাদের ডেকে এনেছিলেন বুদ্ধদেববাবু৷ কিন্তু, বাম মুখ্যমন্ত্রীর সেই স্লোগানকে ফিকে করে সিঙ্গুরে শুরু হয়েছিল জমি আন্দোনল৷ তৃণমূলের নেতৃত্বে সেই আন্দোলন দেখেছিল গোটা বিশ্ব৷ জল গড়িয়েছিল সুপ্রিম কোর্টেও৷ সিঙ্গুর আন্দোলনকে হাতিয়ার করে সরকার গঠন করেছিল তৃণমূল৷ রাজ্য-রাজনীতিতে শুরু হয়েছিল ‘পরিবর্তনে’র শাসন৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী টাটার কারখানা ভেঙে জমির মালিকদের তা ফিরিয়ে দেওয়া হলেও, এখনও অধিকাংশ জমি চাষঅযোগ্য বলে অভিযোগ৷ চাষ কিংবা শিল্প না হওয়ায় এখনও আক্ষেপ করেন জমিদাতাদের একাংশ৷
এবার পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সিঙ্গুরে কৃষিভিত্তিক শিল্প নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু হরল তৃণমূল সরকার৷ জমি চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে বলে খবরে প্রকাশ৷ টাটাদের পরিত্যক্ত কারখানার অদূরে তা নির্মাণের পরিকল্পন হচ্ছে বলে খবর৷ ১০ একর জমিতে হতে পারে শিল্প৷ উর্বর জমিতে কৃষকের অনিচ্ছায় শিল্প হবে না আগেই অবস্থান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে৷ সিঙ্গুরে কারখানা হবে পূর্তদপ্তরের জায়গায়৷ জমি লিজ দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে৷ উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতর৷ টাটাদের কারখানার জমি আজও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে৷ ওই জমির কাছেই রতনপুরে একটি জমিতে শিল্প গড়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলে খবর৷ কৃষি হাব তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে৷ জানা গিয়েছে, রতনপুর মৌজার জমিটি আগেই পূর্ত দফতরের ছিল৷ ওই জমিতেই কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে৷ ১০ একর জমিটির পরিকাঠামো গড়ার কাজ ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম৷ -ফাইল ছবি৷