কলকাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ভাঙড় কেন্দ্র থেকে জিতে রাজ্য রাজনীতিতে সাড়া ফেলে দিয়েছিল আইএসএফ। বিজেপি ও তৃণমূলের বাইরে তারাই একমাত্র দল যাদের কেউ বিধানসভায় জিততে পেরেছিলেন। ভাঙড় থেকে সেবার আইএসএফের টিকিটে জেতেন নওশাদ সিদ্দিকী। পরবর্তীকালে আইএসএফ রাজ্য রাজনীতিতে অনেকটাই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। আর বহুদিন আগেই নওশাদ ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হবেন বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন। সব ঠিকঠাক থাকলে বাম-কংগ্রেসের সমর্থনে সেখানে লড়বেন তিনি। এছাড়া আরও কয়েকটি কেন্দ্রে লড়ার ব্যাপারে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে তারা।
সেই সূত্রে বেশ কিছুদিন ধরে সিপিএমের সঙ্গে আসন নিয়ে দাবিদাওয়া পেশ করতে শুরু করেছে আইএসএফ। আর তাতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রথমেই তারা বামেদের কাছে বারোটি আসন চেয়ে বসে। যে ঘটনায় হতবাক হয়ে যায় আলিমুদ্দিন। এরপর চাহিদা কিছুটা কমিয়ে তারা অন্তত পক্ষে সাতটি আসনের দাবিতে অনড় রয়েছে। তবে এতগুলি আসন তাদের বামেরা ছাড়তে চায় না বলেই খবর। কিন্তু আইএসএফ যেভাবে বেশি আসনে লড়তে চাইছে তাতে রীতিমতো প্রমাদ গুনছে তৃণমূল।
কারণ একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র একটি আসনে আইএসএফ জিতলেও বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে তারা উল্লেখযোগ্য ভাবে ভাল ভোট পেয়েছিল। আমডাঙা থেকে উলুবেড়িয়া, আইএসএফের ভোট শতাংশ দেখে অনেকেই চমকে গিয়েছিলেন। বলাবাহুল্য তার প্রায় পুরোটাই ছিল সংখ্যালঘুদের ভোট। আর তৃণমূল সেই কারণেই আইএসএফকে নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। এবারেও আইএসএফ বেশি আসনে প্রার্থী দিয়ে যদি সংখ্যালঘু ভোটের একাংশ টানতে পারে তাহলে বহু আসনের ফলাফল এদিক ওদিক হয়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে নিশ্চিতভাবে অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যেতে পারে বিজেপি।
এমনিতেই ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে লড়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর হুঙ্কার বহুদিন ধরেই দিচ্ছেন নওশাদ। সেই সঙ্গে তারা উলুবেড়িয়া, বসিরহাট-সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে চায়। এর প্রত্যেকটিতেই বিপুল পরিমাণে সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। তাই যে কেন্দ্রগুলিতে আইএসএফ নজর দিচ্ছে তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে তৃণমূলের। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনে আইএসএফ শেষ পর্যন্ত বাম ও কংগ্রেসের সমর্থনে কটি আসনে লড়ে সেটাই দেখার।