বনগাঁ: ২০ বছরের নিস্তব্ধতা ভেঙে আচমকাই ঝড় উঠেছে আফগানিস্তানে৷ গোটা দেশের দখল নিয়েছে তালিবান৷ ১৫ অগাস্ট কাবুলের পতনের পর বিভীষিকা হয়ে উঠেছে ‘কাবুলিওয়ালা’র দেশ৷ তালিবানের বন্দুকের শব্দে ভেঙে চুরমার সাজানো গোছানো কাবুল৷ ফিরে এসেছে ২০ বছর আগের নৈরাজ্য৷ দুই দশক আবে আপগানিস্তানের পরিস্থিতি কেমন ছিল, সে কথা অনেক শুনেছেন তাঁরা৷ কিন্তু তালিবানের বীভৎস রূপের সাক্ষী থাকল এ বাংলার বিদ্যুৎ, পলাশ ও প্রবীর৷
আরও পড়ুন- কলকাতার জন্মদিন নিয়ে ভুল তথ্য, গুগলকে নোটিশ সাবর্ণ রায়চৌধুরীর পরিবারের
বনগাঁর গোপালনগরে পাল্লা পঞ্চায়েতের শংকরপুর গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ বিশ্বাস ও পলাশ সরকার৷ প্রবীর সরকারের বাড়ি রঘুনাথপুরে৷ গতকাল গভীর রাতে বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা৷ তাঁদের চোখ থেকে যেন কিছুতেই সরছে না ভয়ঙ্কর স্মৃতি৷ গুলির শব্দ, ফাইটার বিমানের গর্জন পিছনে ফেলে মার্কিন বাহিনীর সাহায্যে কাতার হয়ে ভারতে ফিরেছেন তাঁরা৷ বাড়ি ফিরে জানিয়েছে নিজেদের সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা৷
কাবুল বিমানবন্দরের বড় অংশই মার্কিন সেনার দখলে। তাঁদের জন্য ক্যাটারিং-এর কাজ করতে কাবুলে গিয়েছিলেন বিদ্যুৎ, পলাশ ও প্রবীর৷ বুল বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন সেনা ছাউনিতে তাঁরা কাজ করতেন৷ বাড়ি ফিরে তাঁরা জানান, শেষ কয়েকটা দিন প্রবল আতঙ্কের মধ্যে দিন কেটেছে তাঁদের৷ এক সময় ভেবেছিলেন আর বনগাঁর বাড়িতে ফিরবেন না৷ কিন্তু কাবুল তালিবানের কব্জায় যেতেই গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা৷ কারণ তালিবানি ফতোয়া, ৩১ অগাস্টের মধ্যে সকল বিদেশিকে আফগান মুলুক ছেড়ে চলে যেতে হবে৷
মার্কিন সেনার কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে এক সময় বিমানবন্দরের দক্ষিণ গেট দিয়ে ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা৷ বেশ কিছুটা অংশ নিজেদের দখলে নেয় তারা৷ বিদ্যুৎ বিশ্বাসের কথায়, ‘‘কয়েকঘ্ণ্টার মধ্যে জলের স্রোতের মতো জঙ্গিরা ঢুকে পড়ল কাবুলে৷ দখল করে নিল গোটা শহর। বাইরে অবিরাম গুলির শব্দ। আমরা তখন সেনা ক্যাম্পের উপর থেকে সবটা দেখছি৷ তবে মার্কিন সেনা থাকায় আমাদের ক্ষতি হয়নি৷’’
আরও পড়ুন- সরানো হল নারদ মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত CBI অফিসারকে
দেশে ফিরতে চাইলে মোটা টাকার বেতন অফার করেছিল সংস্থা৷ ১৫ দিনের জন্য ৫ ডলার দেওয়ার কথা বলা হয়৷ কিন্তু সেই অফার ফিরিয়ে দিয়ে দেশের মাটিতে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন এই ত্রয়ী৷ ঘরের ছেলে ঘরে ফেরায় শান্তিতে পরিবারও৷