অনশন মঞ্চ থেকে নিখোঁজ তিন! ‘ওঁদের গায়ে আঁচ লাগলে লাশ দেখবেন মাননীয়া’

অনশন মঞ্চ থেকে নিখোঁজ তিন! ‘ওঁদের গায়ে আঁচ লাগলে লাশ দেখবেন মাননীয়া’

78370f28f627342c9c8f2293a8885d46

কলকাতা: রাত তখন ১২টা৷ সল্টলেকের করুণাময়ীর সামনে হাজির বিশাল পুলিশ বাহিনী, ব়্যাফ৷ প্রথমে অনুরোধ পরে হুঁশিয়ারি৷ কিন্তু কোনও কিছুই টলাতে পারেনি ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীদের৷ অবস্থানে অনড় থেকে চালিয়ে যাচ্ছিলেন আমরন অনশন৷ এর পরেই জোড় করে সেখান থেকে তাঁদের তুলে দিল পুলিশ৷ অনেকেই নিরাপত্তাজনিত কারণে রাতে সেখান থেকে যেতে চাননি৷ কিন্তু কোনও কথা শোনেনি পুলিশ৷ টেনে হিঁচড়ে তোলা হয় বসে৷ অসুস্থদের অ্যম্বুলেন্সে করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতালে৷ কিন্তু এই হুলস্থূলের মাঝে করুণাময়ী থেকে নিখোঁজ তিন আন্দোলনকারী৷ কোনও ভাবেই তাঁদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ৷ 

আরও পড়ুন- অনুরোধের পর হুঁশিয়ারি, অবশেষে মধ্য রাতে টেট-উত্তীর্ণদের তুলে দিল পুলিশ

গতকাল রাতে আচমকা পুলিশি হানায় দিশেহারা হয়ে পড়েন আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা৷ নিখোঁজ হয়ে যান অচিন্ত্য ধারা, অচিন্ত্য সামন্ত এবং অর্ণব ঘোষ নামে তিন আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থী৷ এক মহিলা টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘অচিন্ত্য ধারা, অচিন্ত্য সামন্ত ও অর্ণব ঘোষের কোনও ট্রেস আমরা পাচ্ছি না। এই তিন জনের গায়ে যদি একটাও আঁচড় লাগে, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কলকাতার রাজপথে চাকরিপ্রার্থীদের লাশ দেখবেন।”

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ২০১৪ ও ২০১৭ সালের টেট-উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের ওপর আচমকাই অভিযান চালায় পুলিশ। জোর করে চ্যাঙদোলা করে তুলি নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের৷ এদিকে, অনশনমঞ্চ আকড়ে পড়ে থাকার মরিয়া চেষ্টা চালায় চাকরি প্রার্থীরা৷ অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় করুণাময়ীতে। কিন্তু, রীতিমতো বলপ্রয়োগ করে আচার্য ভবনের সামনে থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় চাকরিপ্রার্থীদের। মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষ টেনে হিঁচড়ে  নিয়ে যাওয়া হয়। গত সোমবার থেকে দাঁতে দাঁত চিপে যে লড়াই চালছিল, তা আচমকাই স্তব্ধ হয়ে যায়। পুলিশ তাঁদের সরাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আন্দোলনকারীরা। ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অসুস্থ হয়ে পড়া আন্দোলনকারীদের৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ওই তিন আন্দোলনকারী কোথায় গেলেন, তা নিয়ে শোরগোল বাধে৷ পড়ে যানা যায় তাঁরা রাতভর বিধাননগর থানায় ছিলেন৷ সকালে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়৷