India Coalition Breaks
নিজস্ব প্রতিনিধি: লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই শক্তি বাড়াচ্ছে বিজেপি। যে ঘটা করে বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোট তৈরি হয়েছিল তা দিন দিন ভেঙে পড়ছে। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার জোট ছেড়ে এনডিএ জোটে ফিরে গিয়েছেন। তৃণমূল জোটে থেকেও যেন জোটে নেই। কারণ পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হচ্ছে না বলাই যায়। এই পরিস্থিতিতে ফের ভাঙনের মুখে ‘ইন্ডিয়া’ জোট। নীতিশ কুমারের পর এবার বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটে যোগ দিতে চলেছে রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি), এমনটাই খবর। (India Coalition Breaks)
এনডিএ জোটে ফিরতে চলেছে টিডিপি India Coalition Breaks
অন্যদিকে ছয় বছর পর ফের এনডিএ জোটে ফিরতে চলেছে টিডিপি (তেলেগু দেশম পার্টি)। এমনটাই সূত্রের খবর। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে বেশ শক্তিশালী জাঠ নেতা জয়ন্ত চৌধুরীর আরএলডি। গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোতা করে আরএলডি একটি আসনেও জিততে পারেনি। এবারেও তাঁরা বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটেই ছিলেন। জানা গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে আরএলডি’কে এবার সাতটি আসন ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন অখিলেশ যাদব। কিন্তু জয়ন্ত মনে করছেন জোটে থাকলে এবারও তাঁকে লোকসভা নির্বাচনে শূন্য হাতে ফিরতে হতে পারে। সূত্রের খবর, বিজেপি এবার জয়ন্তের দলকে পাঁচটি আসন ছাড়তে চায়। জয়ন্ত মনে করছেন বিজেপির সঙ্গে থাকলে পাঁচটি আসনেই তাঁদের জেতার সম্ভাবনা থাকবে। সেই কারণেই ‘ইন্ডিয়া’ জোট ছেড়ে গেরুয়া শিবিরের দিকে যেতে চলেছেন জয়ন্ত, এমনটাই খবর।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে জাঠরা এখন যেহেতু বিজেপির দিকেই বেশি ঝুঁকে রয়েছেন, তাই জাঠ সমাজের প্রতিনিধিত্ব করা জয়ন্ত চৌধুরী এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন। যা বিরোধী জোটের কাছে ফের একটা ধাক্কা হতে চলেছে। ঘটনা হল অতীতে বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে কখনও সমাজবাদী পার্টি, কখনও কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে লড়াই করেছিল আরএলডি। কিন্তু এবার আরএলডি নেতৃত্ব মনে করছেন তাতে তাঁদের লাভ হবে না। সেক্ষেত্রে ফের শূন্য হাতে ফেরার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তাই বিজেপির সঙ্গে তাঁদের যাওয়াটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে। একটি সূত্রে খবর, রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ যেদিন উত্তরপ্রদেশে ঢুকবে সেদিনই আরএলডি বিরোধী জোট ছেড়ে এনডিএ শিবিরে যোগ দেবে। কংগ্রেস তথা বিরোধীদের জোর ধাক্কা দেওয়ার জন্যই সেই দিনটিকে বেছে নিতে চলেছে বিজেপি।
অন্যদিকে গত লোকসভায় অন্ধ্রপ্রদেশে একা লড়াই করে টিডিপি মাত্র দুটি আসনে জয় পেয়েছিল। কয়েক মাস আগেই অন্ধ্রপ্রদেশের জগনমোহন রেড্ডির সরকার দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা টিডিপি সুপ্রিমো চন্দ্রবাবু নাইডুকে। বর্তমানে জামিনে ছাড়া আছেন চন্দ্রবাবু। তাই জগনের ওয়াইএসআর কংগ্রেসকে এই লোকসভা নির্বাচনে রুখতে বিজেপির হাত ধরাটা জরুরি বলে মনে করছেন চন্দ্রবাবু। সেই সূত্রে বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। যে কোনও দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে চন্দ্রবাবু এনডিএ জোটে ফিরবেন বলেই খবর। এর আগেও তিনি এনডিএ জোটে ছিলেন। তবে গত লোকসভা নির্বাচনের আগে গেরুয়া জোট ছেড়েছিলেন তিনি। উল্লেখ্য দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে বিজেপি বহুদিন ধরেই শক্তি বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সেই কারণেই অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে বিশেষ নজর রয়েছে বিজেপির। বিজেপি মনে করে চন্দ্রবাবু নাইডু পাশে থাকলে অন্ধ্রপ্রদেশে তাদের ফল ভাল হবে। সব মিলিয়ে লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই বিরোধীদের হতাশা হতাশা বাড়ছে।