বেজিং: এবার দেশের সন্তান নীতিতে পরিবর্তন আনতে চলেছে চিন৷ চিনা কমিউনিস্ট পার্টির নয়া নীতি অনুযায়ী, সেদেশের দম্পতিরা সবচেয়ে বেশি তিনটি সন্তানের জন্ম দিতে পারবেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরকার এই সংক্রান্ত আইন আনবে বলেও সেদেশের তরফে জানানো হয়েছে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই চিনা সরকার ‘সন্তান’ নীতি পরিবর্তনের কথা ভাবছিল। অবশেষে সোমবার প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের উপস্থিতিতে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে। দেশে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সংখ্যা বাড়তে থাকা নিয়েও এদিনের বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই সমস্যা মোকাবিলা করতে আরও একাধিক নীতি নির্ধারণেরও ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের জন্য বেশ কিছু বড় নীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে খবর৷ তবে কবে থেকে এই নতুন নিয়ম দেশে বলবৎ হবে, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
চিনের কমিউনিস্ট পার্টির তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘দেশের সন্তান নীতি বদলানো হচ্ছে। এবার থেকে দম্পতিরা তিন সন্তানের জন্ম দিতে পারবেন। এবার দেশে এই সংক্রান্ত আইন আনা হচ্ছে। পাশাপাশি আরও কিছু আইনে বদল করা হবে। এই নীতিগুলি জনসংখ্যার কাঠামোয় উন্নতি ঘটাবে।’ শুধু সন্তান নীতি নয়, চাকরি ক্ষেত্রে অবসরের বয়স আরও বাড়ানো, শিক্ষার মাধ্যমে বিবাহ এবং পরিবারেরর গুরুত্ব প্রচার, শিশুদের দেখাশোনা, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুযোগসুবিধা বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়েছে
জনসংখ্যার বিস্ফোরণ প্রতিরোধ করতে ১৯৭৯ সালে চিন কঠোর এক সন্তান নীতি চালু করেছিল। এই নীতির লক্ষ্য জন্মহার এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমানো। কার্যত জোর করে ওই নীতি বাস্তবায়ন করায় সরকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমাতে সক্ষমও হয়েছিল। কিন্তু পরে জন্মহার বেশি কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে এই নীতি থেকে সরে ২০১৬ সালে এক সন্তান নীতি বাতিল করে দম্পতিদের দুই সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়৷ তখন থেকেই দুই সন্তান নীতি চালু রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে আরও একটি সমস্যা দেখা গিয়েছে। বিয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্রী মিলছে না। কারণ দেশে মেয়ের সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এরপরই ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিল চিন সরকার। অবশেষে শি জিনপিং সরকার তিন সন্তান নীতিতে সিলমোহর দিল।