মহিষাদল: সম্প্রতি তৃণমূল সরকারের থেকে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেছে শুভেন্দু অধিকারী। মন্ত্রিত্ব পদ ছেড়েছেন। এই মুহূর্তে বঙ্গ রাজনৈতিক মহলে সেই নিয়ে চর্চা থামছে না। এই পরিস্থিতিতে আজ মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর প্রথম জনসভা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। তার এই জনসভাকে কেন্দ্র করে গতকাল থেকেই চরম উত্তেজনা ছিল। প্রত্যেকেই ভেবেছিলেন এই মঞ্চ থেকে দাঁড়িয়ে হয়তো আরো কোন ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দেবেন শুভেন্দু। হয়তো বিধায়ক পদ থেকে কবে ইস্তফা দেবেন সেই ব্যাপারেও ইঙ্গিত মিলবে। কিন্তু আদতে তার কিছুই হলো না। অ-রাজনৈতিক সভা, আখেরে অ-রাজনৈতিকই থাকল। শুভেন্দুর কথায় শুধু শোনা গেল বাংলা এবং বাঙালির আবেগ।
এদিন মহিষাদলে স্বাধীনতা সংগ্রামী শহীদ স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে রাজনৈতিক কোনো ইস্যুর ধারেকাছে পর্যন্ত গেলেন না তিনি। বরং তাঁর কথায় উঠে এলো, তাম্রলিপ্তর ইতিহাস, মাতঙ্গিনী হাজরা, শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর কথা। একই সঙ্গে তিনি দাবি করলেন, তিনি এবং তার সাথীরা যেভাবে রাস্তায় নেমে কাজ করেছে, আগামী দিনগুলোতেও তাঁরা একইভাবে কাজ করবেন। শুভেন্দু কথার মাঝে ভারতীয় সংবিধানেরও উল্লেখ করেন তিনি। মন্তব্য করেন, ভারতীয় সংবিধান হচ্ছে, ‘বাই দ্যা পিপল, ফর দ্য পিপল’, অর্থাৎ জনগণ হচ্ছে সব। সে ক্ষেত্রে আপামর জনগণকে সাথে নিয়ে আগামী দিনগুলোতে কাজ করবেন তিনি, এমনই অঙ্গীকার করেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিনের হাইভোল্টেজ সভা থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো রকম রাজনৈতিক কথা বলেননি তিনি। সুতরাং সকলের যে আশা ছিল আজকের সভা থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন শুভেন্দু, সেই আশায় আপাতত জল ঢালতে হয়েছে।
এদিকে, ৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুর কলেজ মাঠে সভা করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে সভার মূল স্লোগান থাকবে, ‘বাংলাকে গুজরাট বানাতে দেব না’। তবে এই সবার সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের সব বিধায়কদের সেই সভায় উপস্থিত থাকার। যেখানে সভাপতিতে সেটা মূলত পশ্চিম মেদিনীপুর, তাহলে পূর্ব মেদিনীপুরের বিধায়কদের হাজির থাকার নির্দেশ কেন দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জলঘোলা শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারীর আজকের জনসভা ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ যে এলাকায় তিনি সভা করেছেন সেই মহিষাদলের বিভিন্ন জায়গায় শিবসেনার পতাকা উড়তে দেখা গিয়েছিল। মন্ত্রিত্ব ছাড়ার কয়েকদিন আগে পর্যন্ত তৃণমূলের ব্যানার এবং পতাকা ছাড়া জনসভা করেছেন শুভেন্দু। এবার তার জনসভার এলাকায় শিবসেনার পতাকা দেখে আশ্চর্য হয়েছিলেন অনেকেই। যদিও আজকের সভায় কোনওরকম রাজনৈতিক বক্তব্য রাখেননি তিনি।