‘ক্যামেরা থাকবে, আপনি থাকবেন না’! গোটা দেশ দেখল বাংলার সাংবাদিকরা কতটা সুরক্ষিত!

‘ক্যামেরা থাকবে, আপনি থাকবেন না’! গোটা দেশ দেখল বাংলার সাংবাদিকরা কতটা সুরক্ষিত!

কলকাতা: কোনও এক দুষ্কৃতি হুমকি দিয়ে চলেছেন – দেখবেন আপনি থাকবেন ক্যামেরা থাকবে না, ক্যামেরা থাকবে, আপনি থাকবেন না …। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের দিন এই চিত্র উঠে এসেছে। শীতল কণ্ঠে যে যুবক ক্যামেরার সামনে এই কথাগুলি বলে গেলেন তিনি নিজের অজান্তেই সেরা দেশের কাছে এই রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশের বাস্তব চিত্রটি দেখিয়ে গেলেন। নির্বাচন কমিশন, আদালতও নিশ্চয়ই দেখছে।

নন্দীগ্রামে সংবাদমাধ্যমের উপর হামলা আবার প্রমাণ করল বাংলায় নির্বাচনকে গণতন্ত্রের উৎসব বলা যায় না। পঞ্চায়েতে বাংলায় রক্তাক্ত নির্বাচন দেখেছে সারা দেশ। কড়া কেন্দ্রীয় প্রহরার মাঝেও লোকসভা নির্বাচন দেখেছে অশান্তি – সন্ত্রাস। কর্তব্যরত সাংবাদিক এবং সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের হার্মাদরা। বিধানসভা নির্বাচনেও একই চিত্র। কেশপুরে আক্রান্ত হয়েছেন সংবাদমাধ্যম। ভোট আসে ভোট যায় – পশ্চিমবঙ্গের চিত্র পরিবর্তন হয়না।

এদিন সকালেই কেশপুরের একটি বুধে সংবাদমাধ্যমের গাড়িকে আক্রমণ করেন একদল দুষ্কৃতী। তারা সংবাদমাধ্যমের গাড়ি ভাঙচুড় করেন। অভিযোগের তীর তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে। হামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন মহিলারাও। পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন নির্বাচনে গত দশ বছর যে চূড়ান্ত সন্ত্রাস চলেছে তাতে বিরোধীপক্ষের দেখা ছাড়া বিশেষ উপায় ছিল না। পঞ্চায়েত থেকে পুরসভা নির্বাচন – রক্তের হোলি খেলা দেখেছে বাংলা। প্র্শ্ন উঠেছে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও। কেশপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই সংবাদমাধ্যমের গাড়ির উপর হামলা হয়েছে। যারা নির্বাচন পরিচালনা করছেন – তারা সংসাদমাধ্যমকে কেন নিরাপত্তা দিতে পারেন না – তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।

কয়েক বছর আগে বিধাননগর পুরসভার নির্বাচনে কলকাতার বিধায়ক পরেশ পাল, ভাটপাড়ার তৎকালীন বিধায়ক অর্জুন সিংহ (তখন তৃণমূলে ছিলেন) কে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। পরেশ পাল বলেছিলেন , ভোট দেখতে এসেছি। বিধাননগরের সাধারণ জনতার অনেকেই ভোট দিতে পারেননি। সাংবাদিকরা অনেকেই বেধড়ক মারও খান তৃণমূলের গুন্ডার হাত থেকে। অভিযোগ ওঠে ‘রেপ করে দেব’ – তৃণমূলের গুন্ডার মহিলা সাংবাদিকদের নাকি হুমকিও দেন। শহুরে সুশীল সমাজ প্রতিবাদ করেছিলেন। কিন্তু পরিমিত। আজ সেই তৃণমূল কংগ্রেস বুথ দখল এবং বহিরাগত নিয়ে যখন অভিযোগ করছে, সেই সময় অনেকে আবার এও দাবি করেছেন যে, তৃণমূল নাকি অনেক বুথে নির্বাচনী এজেন্ট দিতেই পারেনি। নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন ৭০টি বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি। আশ্চর্য ব্যাপার, গত ১০ বছরে এমন কবে হয়েছে তা অনেকেই মনে করতে পারছেন না।  

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × two =