কলকাতা: গতবছরের মাঝামাঝি সময় থেকে করোনা অতিমারীর যে কোপ পড়তে শুরু করেছিল ভারতীয় অর্থনীতিতে, তার কবল থেকে এখনও পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারে নি নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্রের সেই অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের ছবিটাই বারবার প্রতিফলিত হচ্ছে জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান দামে। মূল্যবৃদ্ধির ধারা বজায় রেখে এবার শিরোনামে উঠে এল সরষের তেল।
গত কয়েকদিনে পূর্ব ও উত্তর পূর্ব ভারতে সরষের তেলের দাম যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, তা বিগত সমস্ত রেকর্ডই ভেঙে দিয়েছে। কলকাতায় সরষের তেলের দাম ছুঁয়েছে লিটার প্রতি ১৬০ থেকে ২৮০ টাকা। করোনায় বিপর্যস্ত গৃহস্থের পকেটে সরষের তেলের আকাশছোঁয়া এই দাম এনেছে নতুন কোপ।
গত বছরেও এই অঞ্চলে সরষের তেলের প্রতি লিটার বিক্রি হত ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। কিন্তু এবছর দাম বেড়েছে রেকর্ড হারে। চারিদিক থেকে সরষের জোগান কমে আসাই এর কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আশার কথা, এ বছর সরষের ফলন ভালো হয়েছে। নতুন সরষে সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিন্তু পাঞ্জাব, হরিয়ানা রাজস্থান প্রভৃতি এলাকায় কৃষি আইন বিরোধী আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে এই প্রক্রিয়ার উপর। ফলে এই সব রাজ্য থেকে সময় মতো সরষে রপ্তানি হচ্ছে না। এরই ফল দেখা যাচ্ছে বাজারের আগুন দামে।
ভারতে খাদ্যযোগ্য তেল মূলত আসে সয়াবিন কিংবা পাম তেল থেকে। কিন্তু এ বছর এই দুই বিকল্পের জোগানই কমে গেছে অনেকটা। চাহিদা এবং জোগানের এই ব্যবধানে নাজেহাল গৃহস্থরা। এ প্রসঙ্গে পোস্তা মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি বিশ্বনাথ আগরওয়াল বলেছেন, ‘‘বাদাম তেলের দাম গত বছর ছিল প্রতি লিটার ১৫৬ টাকা। কিন্তু এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭০ টাকা। সয়াবিন তেলের প্রতি লিটারের দাম ৮০টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩০ টাকা। এছাড়া রাইস ব্র্যান তেলের দাম যেখানে ছিল ৭৫-৮০ টাকা, তা এখন হয়েছে ১২৫-১৪০ টাকা।’’ ফেব্রুয়ারি মার্চ মাস নাগাদ তেলের নতুন বীজ কারখানায় না পৌঁছোনো পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ নিচ্ছেন বিক্রেতারাও। তাঁরা MRP-তেই তেল বিক্রি করা শুরু করেছেন যা সাধারণত মূল দামের চেয়ে বেশি হয়।