কলকাতা: এসে গেল গরমের মরশুম৷ চড়চড় করে বাড়বে বিদ্যুতের চাহিদা৷ এসি, ফ্যান ছাড়া এক মিনিটও থাকা দায়৷ এদিকে, গরম পড়লেই ফি বছর বাড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের আশঙ্কা৷ এবারও সেই আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়েছে৷ গ্রীষ্মের দাবদাদে চাহিদা বাড়ার মাঝেই কি বাড়তে চলেছে বিদ্যুতের খরচ? সেই প্রশ্নটাই এখন বড় হয়ে উঠেছে৷ এর যথেষ্ট কারণও রয়েছে৷ কোল ইন্ডিয়ার তরফে কার্যত স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে কয়লার দাম বৃদ্ধি পেতে চলেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে কয়লার দাম বাড়ানো ছাড়া তাদের কাছে কোনও উপায় নেই বলেই দাবি। আর কয়লার দাম বাড়লে যে বিদ্যুতের পাশাপাশি ইস্পাত সহ একাধিক পণ্যের দাম বাড়বে, তা একপ্রকার নিশ্চিত৷
আরও পড়ুন- ‘অঘ্রাণ, চৌঠা অঘ্রাণ, বাকিটা হিসাব করে নিন না’, অনুব্রতর উত্তরে হতবাক ইডি কর্তারা
সোমবার কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে কোল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান প্রমোদ আগরওয়াল বলেন, কয়লার মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে শীঘ্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একাধিক মহলের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। হঠাৎ করে কেন দাম বাড়ানোর পরিস্থিতি তৈরি হল, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন প্রমোদ আগরওয়াল৷ তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে কয়লার দাম বাড়েনি। এদিকে, বছরের শুরু থেকেই কোল ইন্ডিয়ার কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে দর কষাকষি শুরু হয়েছে। এমতাবস্থায় সংস্থার কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি যদি করতেই হয়, তাহলে কোল ইন্ডিয়ার উপর আর্থিক চাপ অনেকটাই বেড়ে যাবে। প্রমোদ আগরওয়ালের কথায়, এই রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উৎপাদক সংস্থার আওতাধীন বেশ কয়েকটি সংস্থায় কর্মীদের বেতন অনেকটাই বেশি। সেই বেতন মেটাতে গিয়েই সংস্থার উপর বেশ চাপ পড়ে। তাই কয়লার দাম বাড়ানো না গেলে, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে। অবিলম্বে কয়লার দাম বৃদ্ধি ছাড়া কোল ইন্ডিয়ার সামনে অন্য কোনও পথ খোলা নেই বলেই মত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের৷
যদিও রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা মনে করছেন, কোল ইন্ডিয়া কয়লার দাম বাড়ালেও তার প্রভাব এখানে বিশেষ পড়বে না। কারণ, রাজ্যের আওতাধীন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লার জোগান আসে সরকারের নিজস্ব খনি থেকে। কয়লার জন্য রাজ্যকে কোল ইন্ডিয়ার উপর নির্ভরতা প্রায় করতেই হয় না৷ তাই কোল ইন্ডিয়ার সিদ্ধান্তে রাজ্যের উপভোক্তাদের উপর বিশেষ প্রভাব পড়বে না বলেই আশাবাদী বিদ্যুৎ দফরের আধিকারিকরা।
এদিকে, কোল ইন্ডিয়াকে বার্ষিক ১০০ কোটি টন কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব বলেই দাবি সংস্থার চেয়ারম্যান প্রমোদ আগরওয়ালের। তিনি জানান, দেশে জ্বালানির চাহিদা অনুযায়ী কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারিত হয়। যখন প্রয়োজন অনুযায়ী জ্বালানি পাওয়া যায়, তখনই একটা দেশ উন্নত হয়। দেশে কয়লার চাহিদা বাড়লে, আমরা তা জোগান দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>