‘নন্দীগ্রামের মুক্তিসূর্য’ শুভেন্দু অধিকারী কে? কী তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্ব?

‘নন্দীগ্রামের মুক্তিসূর্য’ শুভেন্দু অধিকারী কে? কী তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্ব?

 
 

কলকাতা: তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত ধাক্কা দিয়ে আগেই মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। ছেড়ে দিয়েছেন সরকারি নিরাপত্তা৷ হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স এবং হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন৷ সরকারি নিরাপত্তা ত্যাগ করে মন্ত্রী ও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি পদত্যাগ করায় স্বাভাবিকভাবেই অনেকটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে তৃণমূল৷ তবে বাংলা তথা নন্দীগ্রামের রাজনীতিতে শুভেন্দু অধিকারীর গুরুত্ব কতটা, তা জানার প্রয়োজন রয়েছে৷

শুভেন্দু অধিকারীর গুরুত্ব জানতে গেলে প্রথমেই জানতে হবে তাঁর পরিবারের গুরুত্বের কথা। এক্ষেত্রে শুধু শুভেন্দু অধিকারী গুরুত্বপূর্ণ নন, গোটা অধিকারী পরিবার ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে। কারণ পূর্ব মেদিনীপুরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবার হল অধিকারী পরিবার। শুভেন্দু অধিকারী যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী ছিলেন, তাঁর বাবা শিশির অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সাংসদ। অন্যদিকে ভাই দিব্যেন্দু অধিকারীও একজন সাংসদ। পাশাপাশি সৌমেন্দু অধিকারীর কাঁথি মিউনিসিপালিটি চেয়ারম্যান। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে এই পরিবার এবং পরিবারের সদস্যরা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এবার নজর রাখা যাক শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক উত্থানের দিকে।

১৫ ডিসেম্বর ১৯৭০ সালে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথিতে জন্মগ্রহণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর পিতা তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী এবং মাতা শ্রীমতি গায়ত্রী অধিকারী। কাঁথি কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান তিনি। পরবর্তী সময়ে ২০০৬ সাল থেকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নিজের অস্তিত্ব স্থাপন করেন শুভেন্দু। ২০০৬ সালে কাঁথি দক্ষিণ থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে বিধায়ক নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৯ সালে তমলুক থেকে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে পরে শিল্প দপ্তরের স্থায়ী কমিটির সদস্য নিযুক্ত হন। এরপর ২০১৪ সালে তমলুক কেন্দ্র থেকে পুনরায় লোকসভায় নির্বাচিত হন শুভেন্দু। তার ঠিক দু’বছর পর অর্থাৎ ২০১৬ সালে নন্দীগ্রাম থেকে বিধানসভার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী দায়িত্ব পান। বাম জমানায় অবসান ঘটিয়ে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার আগে নন্দীগ্রাম আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের ভূমি উচ্ছেদ বিক্ষোভ কমিটির হয়ে সেই সময় নন্দীগ্রামে স্থানীয়দের একত্রিত করার কাজ নিজের কাঁধে সামলেছেন শুভেন্দু। রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কারণ নন্দীগ্রাম৷ কিন্তু, এহেন শুভেন্দুর আচমকা মন্ত্রিত্ব ও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা যতেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *