রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বাজতেই নিজেদের ঘর গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে শাসক ও বিরোধীরা। নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই বাড়ছে দল বদলের হিড়িক। আর এই দলবদলকে কেন্দ্র করে প্রতি মুহূর্তে বদলাচ্ছে রাজনৈতিক হিসেবনিকেশ। তৃণমূল ছেড়ে এবার সিপিএমে যোগ দিল হাজার পরিবার। সিপিএমের দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে তৃণমূল ছাড়লেন নদীয়ার কৃষ্ণনগর ১ নম্বর ব্লকের ভালুকা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আনন্দবাস এলাকায় প্রায় এক হাজার পরিবার। সোমবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা শাসক দল ছেড়ে সিপিএমে যোগদান করেন। যোগদানকারীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন সিপিএমের নদীয়া জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস। উপস্থিত ছিলেন এলাকার পঞ্চায়েত নির্বাচনের জেলা পরিষদের বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী প্রবীর মিত্র সহ অন্যান্যরা।
সিপিএম সূত্রে জানা গেছে, যোগদানকারীরা সকলেই ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক তৃণমূল নেতার পরিজন ও তার অনুগামী। এক সময় ভালুকা পঞ্চায়েতে এদের হাত ধরেই ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। কিন্তু, পরবর্তী সময়ে তৃণমূলের অপশাসনে অতিষ্ঠ হয়ে এরা তৃণমূল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। কোতোয়ালি থানার ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের আনন্দবাস রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। গ্রামে ছ’টি বুথ রয়েছে। এর উপরেই ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবিষ্যৎ অনেকটা নির্ভরশীল। ২০১১ সালের পর থেকেই গোটা গ্রাম ছিল বিরোধী শূন্য। কিন্তু, দলের অন্দরের গোষ্ঠী কোন্দল ক্রমশ অস্বস্তি বাড়ায় শাসকের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তৃণমূলের বিবাদমান দুই গোষ্ঠীর এক দিকে ছিলেন হবিজুর মণ্ডল আর অন্য দিকে জিন্নাত শেখ। সম্প্রতি, দুই পক্ষের মধ্যে বোমাবাজির ঘটনায় পুলিশ হবিজুরকে গ্রেফতার করে। কিন্তু জিন্নাতকে স্পর্শ করে না। সেই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে হবিজুরের পরিবারের সদস্য ও অনুগামীরা সোমবার সিপিএমে যোগদান করে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই যোগদান তৃণমূলকে কতটা চাপে ফেলবে? সেটাই এখন দেখার।