কলকাতা: কয়েকদিন আগেই কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তাতে শহর জুড়ে সাড়া মেলায় খুশি পুরসভা কর্তৃপক্ষ। পুরসভা তরফে বলা হয়েছিল, কলকাতার বিভিন্ন হাউসিং সোসাইটি, বাজার সমিতির মানুষজন যাঁরা নিজেদের জায়গায় করোনা পরীক্ষা করাতে চান, তাঁদের পুরসভার পক্ষ থেকে বিনামূল্যে সেই সুবিধা দেওয়া হবে। তাতেই মাত্র তিন-চার দিনের মধ্যেই বিপুল আগ্রহ নিয়ে আবেদন করেছেন শহরবাসী।
পুরসভা তরফে ভাবা হয়েছিল, প্রতিটি হাউসিং সোসাইটি থেকে ন্যূনতম ২০ জনের আবেদন পেলেই অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু করবে পুরসভা। সেখানে একাধিক জায়গায় ৫০ থেকে ৮০ জন মানুষ করোনা পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছেন। এর মধ্যেই শহরের প্রায় দশটি হাউসিং সোসাইটিতে এই কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে পুরসভা তরফে। করোনাকে রুখতে টেস্ট, ট্র্যাক ও ট্রিট-এই তিনটি 'টি' এর ওপরেই নির্ভর করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই লক্ষ্যে সরকার চাইছেন বেশি সংখ্যক মানুষের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করতে।
বর্তমানে কলকাতার একাধিক ওয়ার্ডে করোনা পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। সপ্তাহের ৭ দিনের মধ্যে ৬ দিনই এই কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি আরটিপিসিআর কর্তৃক লালারস সংগ্রহ ও পরীক্ষার কাজও চলছে দ্রুত গতিতে। ইতিমধ্যেই শহর জুড়ে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। শহরের বস্তি অঞ্চল, নিম্ন মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত এলাকার মানুষজনের এই কর্মসূচীতে সাড়া পাওয়া গেলেও প্রথমদিকে আবাসনের ক্ষেত্রে ছবিটা কিছুটা আলাদাই ছিল। পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে বা কোনও এলাকার মোবাইল ভ্যানের সামনে লাইন দিয়ে পরীক্ষা করানোর বিষয়ে আগ্রহ দেখা যাচ্ছিল না আবাসনের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে। কিন্তু বর্তমানে পুরসভা তরফে আবাসনে গিয়ে পরীক্ষা করানোয় এই সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। পুরসভা তরফে আবেদনের জন্য দেওয়া হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে প্রতিদিনই একাধিক আবেদন জমা পড়ছে।
তবে পাশাপাশি একটি সমস্যাও দেখা দিয়েছে। পুরসভার এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, আবাসনের একাধিক মানুষই অফিসযাত্রী। ফলে তারা ছুটির দিন শনিবার কিংবা রবিবার টেস্ট করাতে চাইছেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে একসঙ্গে সবার পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই অন্যান্য দিনগুলিতে সন্ধ্যার পরে টেস্ট করানোর কথা ভেবেছে পুরসভা। পুরসভা তরফে জানানো হয়েছে, এখনও কলকাতা শহরের বড় অংশের পরীক্ষা করা বাকি। যত দ্রুত তা করা যাবে তত দ্রুতই করোনা নিয়ন্ত্রণে সাড়া মিলবে।