নিজস্ব প্রতিনিধি: সিপিএম তথা বামেরা রাজ্যের কোথাও নেই। তারা বহু দিন আগেই সাইনবোর্ড হয়ে গিয়েছে। এই প্রচার বহুদিন ধরেই করছে বিজেপি। ঘটনা হল গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে শূন্য হয়ে গিয়েছে রেড ব্রিগেড। কিন্তু এত কিছুর পরেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বৃহস্পতিবার যাদবপুরে দলীয় প্রার্থীর হয়ে সভা করতে গিয়ে যা বললেন তাতে এটাই স্পষ্ট হয়েছে যে, যাদবপুরে বামেরা এখনও বড় ফ্যাক্টর হিসেবে রয়েছে। আর সেই কারণেই শুভেন্দু তৃণমূলের চেয়েও বোধহয় বেশি মাত্রায় আক্রমণ করেছেন সিপিএমকে। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “তৃণমূল কংগ্রেসকে একমাত্র হারাতে পারে বিজেপি। সেটা অনেক বামপন্থী উপলব্ধি করতে পেরেছেন। সেই কারণে তাঁরাও বিজেপিতে চলে এসেছেন।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিধানসভা ভোটে জয়ী করার নেপথ্যে ছিল এই সিপিএম। ওরা প্রচার করেছিল নো ভোট টু বিজেপি। এভাবেই তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিল বামেরা।” উল্লেখ্য গত লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী পেয়েছিলেন ৬ লক্ষ ৮৮ হাজার ভোট। অন্যদিকে সিপিএম প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্য ৩ লক্ষ ২ হাজার এবং বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরা পেয়েছিলেন ৩ লক্ষ ৯৩ হাজার ভোট। এতেই স্পষ্ট সিপিএমের যথেষ্ট সাংগঠনিক ভিত্তি রয়েছে যাদবপুরে। আর সেই কারণেই শুভেন্দু চড়া সুরে আক্রমণ করেছেন বামেদের। শুভেন্দুর কথাতেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যাদবপুর কেন্দ্রে বামেদের যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি। বামেরা প্রচারে কতটা সাড়া পাচ্ছে, জনসভায় বাম নেতৃত্ব কী বলছেন, এই সমস্ত খুঁটিনাটি দিকের প্রতি বিজেপির যে নজর রয়েছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। আসলে শুভেন্দু চাইছেন বাম ভোটের সিংহভাগ ভাঙিয়ে বিজেপির দিকে নিয়ে আসতে। কিন্তু রাজনৈতিক মহল মনে করে সিপিএমের নবীন প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য যাদবপুরে প্রচারে নেমে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছেন। আর সেটা যে বিজেপির কাছে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। সেই সূত্রে শুভেন্দু সম্পূর্ণ কৌশলগত কারণে সিপিএমকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার শুভেন্দুকে এমন বক্তব্য রাখতে দেখা গিয়েছে। তাই যাদবপুরের মতো কেন্দ্র, যা একটা সময় সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল, সেখানে বাম ভোটকে বিজেপি ভাঙতে পারে কিনা, এখন সেটাই দেখার।