বোলপুর: শান্তিনিকেতনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বাড়ির জমি বিতর্ক নিয়ে জারি তরজা। শান্তিনিকেতনের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ অমর্ত্য সেনের বাড়ি ‘প্রতীচী’। কিন্তু শান্ত নিরালা পরিবেশে রাবীন্দ্রিক ঢঙে নির্মিত এই বাড়ি নিয়েই গত কয়েকদিন ধরে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
শান্তিনিকেতনের জমি নিয়ে সম্প্রতি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে তা নিয়ে এবার নিজেদের কড়া অবস্থানের কথা জানিয়ে দিল বিশ্ববিদ্যালয়। জমি বিতর্কে ছাড় পাবেন না কেউই, তা সে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন হলেও না। প্রয়োজনে শান্তিনিকেতনে অমর্ত্য সেনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র জমি মাপজোক করে দেখবে ভূমি ও ভূমিরাজস্ব দফতর, এদিন এমনটাই জানিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ৷ এই ঘোষণা যে আদতে প্রতীচী জমি বিতর্ককে জটিল করে তুলল আরও কয়েকগুণ, তা বলাই বাহুল্য।
শনিবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এক সাংবাদিক সম্মেলনের ডাক দেয়। সেখান থেকেই ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো এক হাত নেন অমর্ত্য সেনকে। বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর অভিযোগের তালিকাটা আদতে অনেকটাই লম্বা। ওঁর (অমর্ত্য সেন) মতো আরো অনেকের জমি নিয়েই রয়েছে প্রশ্ন।’’ এরপরই জমি বিতর্কে নিশ্চিত হতো মাপজোক করার কথা বলেন তিনি। ‘‘মাপজোকে বিশ্বভারতীর আপত্তি নেই’’, জানিয়েছেন তিনি। তাঁর এই মন্তব্যের পরেই প্রতীচী নিয়ে ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বস্তুত, প্রতীচীর জমিকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে অমর্ত্য সেনের। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে দাবি, বিশ্বভারতীর অন্তত ১৩ ডেসিমাল জমি রয়েছে অমর্ত্য সেনের পৈত্রিক বাসভবনের সীমানার মধ্যেই। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অবশ্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এহেন অভিযোগ মেনে নিতে নারাজ। প্রয়োজনে এ বিষয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়, প্রতীচী বিতর্ক নিয়ে এক চিঠিতে নিজের মতামত জানিয়ে মুখ খুলেছেন প্রবীণ অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তাঁর মতে, প্রতীচীর জমি নিয়ে বিতর্কের পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক কারণ। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই তাঁকে এভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, জমি বিতর্কে অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবরকম সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কিন্তু যত দিন গেছে ততই প্রতীচীর জমি নিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে অমর্ত্য সেনের।