নয়াদিল্লি: যোগগুরু বাবা রামদেব অ্যালোপ্যাথি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিলেই তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ ফিরিয়ে নেবে আইএমএ তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন৷ বাবা রামদেব এবং আইএমএ তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে বিতর্কের মধ্যেই শুক্রবার একথা জানালেন আইএমএর সর্বভারতীয় প্রধান ডা. জেএ জয়ালাল৷
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইএমএর সর্বভারতীয় প্রধান ডা. জেএ জয়ালাল জানান, ‘যোগগুরু রামদেবের সঙ্গে আমাদের কোনও ব্যক্তিগত সমস্যা নেই। কিন্তু করোনার টিকা নিয়ে তাঁর মন্তব্যগুলি শুনে আমআদমি ধন্দে পড়তে পারে। তাঁদের বিপথে চালিত করতে পারে৷ আমরা এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ তাঁর অনুগামীর সংখ্যা অনেক। তিনি যদি এ প্রসঙ্গে তাঁর সব মন্তব্য প্রত্যাহার করে নেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে আইএমএ যে অভিযোগ দায়ের করেছে ও তাঁকে যে মানহানি মামলার নোটিস পাঠিয়েছে, তা ফিরিয়ে নেবে।’
এদিকে আইএমএর উত্তরাখণ্ড শাখা যোগগুরুকে সরাসরি বিতর্কের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, রামদেবকে বলতে হবে কোন অ্যালোপ্যাথিক হাসপাতালে চিকিৎসা করতে পতঞ্জলির ওষুধ ব্যবহৃত হয়। এখনও পর্যন্ত রামদেবের তরফে সেই চ্যালেঞ্জের জবাব পাওয়া যায়নি৷
সম্প্রতি, যোগগুরু রামদেবের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, যাতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি আসলে বোকামি। লক্ষ লক্ষ মানুষ অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খেয়েই প্রাণ হারাচ্ছেন৷’ এতেই মারাত্মক ক্ষুব্ধ হন দেশের চিকিৎকরা৷ রামদেবকে আইনি নোটিসও পাঠায় আইএমএম৷ যদিও পরে বিতর্কের মুখে তাঁর করা মন্তব্য নিয়ে সাফাই দিয়ে পতঞ্জলি দাবি করে, এটা একটা গোপন বৈঠক ছিল। আর স্বামীজি শুধুমাত্র হোয়াটসঅ্যাপের একটি মেসেজ ভক্তদের পড়ে শোনাচ্ছিলেন। ভিডিওয় তাঁর বক্তব্য ভুলভাবে বর্ণনা করা হচ্ছে। তাতেও বরফ গলেনি৷ আইএমএ রামদেবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখে৷ এরপরই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন দু’পাতার চিঠি লিখে ক্ষমা চাইতে বলেন রামদেবকে ৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর চিঠি পেয়ে চাপের মুখে বাবা রামদেব প্রকাশ্যে ক্ষমা চান ঠিকই, কিন্তু ফের অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে ২৫টা প্রশ্ন করেন। তাঁর প্রশ্ন, অ্যালোপ্যাথি এত ভালো হলে, চিকিৎসকরা অসুস্থ হন কেন। অ্যালোপ্যাথি ২০০ বছরেও বহু রোগের ওষুধ তৈরি করতে পারেনি কেন? অ্যালপ্যাথি এখনও থাইরয়েড, আর্থারাইটিস, অ্যাজমার মতো রোগ সারাতে পারে না কেন? চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে যোগগুরুর এহেন কাজের জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে ২৬ মে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদোহিতা আইনে’ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানায় আইএমএ৷ এক হাজার কোটি টাকা মানহানির মামলা করে আইএমএর উত্তরাখণ্ড শাখা।