উদয়নারায়ণপুর: জীবনে চলার পথে প্রতিবন্ধকতা আসে অজস্র। কিন্তু তার মধ্যে দিয়েই যে লক্ষ্যে অবিচল থেকে এগিয়ে যেতে পারে সামনের দিকে, সাফল্য আসে তাঁরই ঝুলিতে। অমোঘ এই নীতিবাক্য অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হয়ে গেছে হাওড়ার তরুণ উৎসব সিনহার জীবনে।
উৎসব বাইক চালান। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের রাইডিং ক্লাব ভিলেজ বাইকার্সের (Village Bikers) সদস্য তিনি। তিনি ও তাঁর সঙ্গী ক্লাবের অন্যান্য সদস্যরা সম্প্রতি পা রেখেছেন হিমালয়ের পিরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণির সাচ পাস ও স্পিতি ভ্যালিতে। শুধু মাত্র বাইক চালিয়েই দুর্গম এলাকায় পৌঁছে গিয়ে নতুন রেকর্ড করেছেন ভিলেজ বাইকার্সের সদস্যরা। উদয়নারায়ণপুরের ২২ বছর বয়সী উৎসব সিনহা সর্বকনিষ্ঠ ভারতীয় বাইকচালক হিসেবে সাচ পাস ও স্পিতি ভ্যালি জয় করেছেন। সাফল্যের শিরোপা হিসেবে সম্প্রতি ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস থেকে উৎসবের হাতে এসে পৌঁছেছে পদক এবং শংসাপত্র। তাঁর এবং ভিলেজ বাইকার্স ক্লাবের সাফল্যের উচ্ছ্বসিত হাওড়াবাসীরা।
সাফল্যের মুকুট পড়ে উৎসব জানিয়েছেন, ছোটোবেলা থেকেই অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষ তিনি। বাবার কাছে প্রথম বাইক চালানোয় হাতেখড়ি হয়েছিল। তার পর থেকে ওই দু-চাকাই সর্বক্ষণের সঙ্গী। স্পিতির ডেসার্ট মাউন্টেন আর বরফ ঢাকা শৃঙ্গের মাঝখান দিয়ে বহুদিন ধরেই বাইক ছোটানোর স্বপ্ন দেখতেন বলে জানিয়েছেন উৎসব। ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে এর আগে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে সাফল্যের শিরোপা ছিল মুম্বাইয়ের ডিম্পল সিংয়ের মাথায়। ২৮ বছর বয়সে ওই রেকর্ড গড়েছিলেন ডিম্পল সিং। কিন্তু হাওড়ার উৎসব সিনহা মাত্র ২২ বছর ১১ মাস ২১ দিনেই বাইক চালিয়ে ছুঁয়েছেন স্পিতি ভ্যালি। রেকর্ডের মেডেল হাতে নিয়ে এদিন উৎসব বলেন, ‘‘১৪৫০০ ফুটের সাচ পাস, যে রুটকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিকূল ও ভয়ঙ্কর রাস্তার মধ্যে অন্যতম, সেই রাস্তায় বাইক ছুটিয়ে আমি গর্বিত।’’
সাফল্যের দুর্গম পথে উৎসবের সহযাত্রী ছিলেন ভিলেজ বাইকার্স ক্লাবের সদস্য গোপীনাথ হুদাতি, বিবেকানন্দ রায়, অরিন্দম সিনহা এবং অসীম পাত্র।যাত্রা পথে সবসময় তাঁরা উৎসাহ জুগিয়েছেন বলে জানিয়েছেন উৎসব। ক্লাবের প্রেসিডেন্ট গোপীনাথ হুদাতির কথায়, ‘‘এই ধরণের জাতীয় স্তরের রেকর্ড অনেককে প্রেরণা জোগাবে। উৎসবের আগামী জীবনের জন্য অনেক শুভকামনা রইল।’’