কলকাতা: রাজনৈতিক ময়দানে বাজিমাত করার লক্ষ্যে ফের টার্গেট করা হল শিক্ষাঙ্গনকে। শুক্রবার বিজেপির শিক্ষাসেলের মিছিলের পর ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অনুপম হাজরা বলেন, “রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে সিঙ্গুর আন্দোলনের ইতিহাস কিংবা বেচারাম মান্নার জীবনী নয়, স্কুলে পড়ানো হবে রামের ইতিহাস৷” এদিন সভায় উপস্থিত কর্মীরা প্রবল করতালির মাধ্যমে বিশ্বভারতীর প্রাক্তন সহ-অধ্যাপকের এই ‘ভবিষ্যদ্বাণী’কে স্বাগত জানান। একই সুরে এদিন বিজেপির শিক্ষাসেলের আহ্বায়ক দীপল বিশ্বাস বলেন, “স্কুলের সিলেবাসে ‘রংধনু’ আবার ‘রামধনু’ হবে৷”
বিজেপি নেতাদের এমন মন্তব্যকে কটাক্ষ করে শুক্রবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা তথা তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “এমনিতেই মানুষ রামায়ণ পড়ে। তাছাড়া স্কুলে পড়ানোর জন্য উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা আছে, পরশুরামের লেখা আছে, সেগুলি পড়াক না। রামের ইতিহাস আবার কী?”। পাশাপাশি তিনি বিজেপির রাম-রাজনীতিকে কটাক্ষ করে বলেন, “রামায়ণটা ভালো করে আগে ওরা পড়ুক। রামায়ণ মাহাকাব্য। কিন্তু রামকে ‘পলিটিক্যাল টুল’ বানানোর আমরা বিরুদ্ধে। রাম তো মহাকাব্যের নায়ক। সেটা নিয়ে রাজনীতি করার কী আছে?”।
এদিকে শুক্রবার কলেজ স্কোয়ারে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মাল্যদান করে বিজেপির ‘শিক্ষা বাঁচাও পদযাত্রা’র সূচনা করেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার, বিজেপি রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ’ও। এদিনের মিছিলে বিজেপি যুব মোর্চা কর্মী এবং বিজেপির সাধারণ কর্মীরা পা মিলিয়েছিলেন, যাদের হাতে ছিল স্কুল শিক্ষক, এসএসকে-এমএসকে, পিটিটিআই, আন এডেড মাদ্রাসা নিয়োগ ও বেতন প্রদানের দাবিদাওয়া লেখা প্ল্যাকার্ড এবং মুখে ছিল ‘খেলা হবে’ শ্লোগান। এই বিক্ষোভ মিছিল কলেজ স্ট্রিট, বউবাজার হয়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে ওয়াই চ্যানেলে পৌঁছয় মিছিল, সেখানে মিছিলে যোগ দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ওয়াই চ্যানেলে একাধিক ইস্যুতে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে বক্তব্য রাখেন দিলীপ ঘোষ এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়’রা। সভা শেষে বিভিন্ন সংগঠন এবং বিভিন্ন কর্মীরা দাবিদাওয়া সম্বলিত একটি স্মারকলিপি তুলে দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাতে।