নয়াদিল্লি: ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ-পরিস্থিতির উপর প্রত্যেকটা মূহুর্তে নজর রাখছে ভারত। কারণ, উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কের যদি আরও অবনতি হয় বা একে অপরকে লক্ষ্য করে পুনরায় হামলা চালাতে থাকে বা তার থেকেও খারাপ পরিণতির দিকে এগোয় পরিস্থিতি, তাহলে এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে ভারতের অর্থনীতিতে। বর্তমান পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টকে ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দাম ব্যারেল প্রতি ৯০ ডলারে ঠেলে দিয়েছে। পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর মানে সোজা কথা বাড়তে পারে পেট্রোল ডিজেলের দাম৷
আর সোনার দাম? সেটাও কি বাড়তে পারে নাকি এই যুদ্ধের প্রভাবে? তথ্য বলছে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের পর ১৫ই এপ্রিল সোনার দাম উচ্চ পরিমাণে বেড়ে গিয়েছিল৷ সোনা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে ১২ এপ্রিল, কমক্স গোল্ড জুন ফিউচার ট্রয় আউন্স প্রতি ২,৩০৮.৮ এ ছিল, যখন MCX-এ দাম ৭৩৯৫৮ টাকা প্রতি ১০ গ্রাম রেকর্ড করা হয়েছিল, যা এটির রেকর্ড উচ্চ স্তর। যেখানে MCX-এ মে ফিউচারের জন্য রূপার দাম ছিল ৮৬১২৬ টাকা প্রতি ১ কেজি। রৌপ্য ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ১০ শতাংশ এবং এপ্রিলে ৫ শতাংশ বেড়েছে। দেখুন সোনা এবং রুপো একটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচিত হয়। যুদ্ধ বা ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে মানুষ খুব বেশি ঝুঁকি না নিয়ে সোনা ও রূপার মতো ধাতুতে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করে। এখন ইরান ও ইজরায়েলের যুদ্ধের কারণে সোনার চাহিদা দ্রুত বাড়তে চলেছে, যার কারণে এর হারও বাড়বে।
এদিকে প্রয়োজনীয় অপরিশোধিত তেলের ৮০ শতাংশই আমদানি করে ভারত । এই তেল আমদানি করতে যদি আরও মোটা বিল মেটাতে হয় তাহলে তার সার্বিক প্রভাব পড়তে পারে অর্থনীতিতে। তেলের দাম বাড়লে তার কোপ পড়বে দেশের বৃদ্ধিতেও। অর্থনীতিতে বাড়বে মুদ্রাস্ফীতির চাপ। বাণিজ্যের ভারসাম্যহীনতা এবং চলতি হিসাবের ঘাটতি সাঁড়াশি চাপ সৃষ্টি করবে রুপির উপর। রাশিয়া থেকে অশোধিত তেলের সস্তায় আমদানি ভারতের আর্থিক পরিস্থিতির-সহায়ক ছিল। তা সত্ত্বেও, ভারতে আমদানিকৃত তেলের অধিকাংশটাই আসে পশ্চিম এশিয়া থেকে। ২০২৩ সালে যে পরিমাণ ছিল ৪৪ শতাংশ। এই আবহে যুদ্ধ বাঁধলে ভারত অপরিশোধিত তেলের সরবরাহে সমস্যা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর WTI অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে হয়েছিল ব্যারেল প্রতি ১৩৩ ডলার। তাই পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয় সেদিকে সম্পূর্ণ নজর রাখছে নয়া দিল্লি৷