বৃদ্ধ বাবা-মাকে না দেখলে যেতে হবে জেল, ঝড়ের গতিতে নয়া আইন আনছে কেন্দ্র

সরকারের পাশ করতে চাওয়া বিল গুলির মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিল হল, 'মেনটেন্যান্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অব পেরেন্টস অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেনস' সংশোধনী বিল। এটি বহু প্রতীক্ষিত এবং চর্চিত একটি বিল। এই বিলের সংশোধনীর মাধ্যমে বৃদ্ধ ও আর্থিকভাবে দুর্বল বাবা মায়ের প্রতি সন্তান ও নাতি নাতনিদের দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে। দায়িত্ব থেকে দূরে সরে গেলে অন্ততপক্ষে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও জেল হবে।

 

নয়াদিল্লি: আসন্ন বাদল অধিবেশনে নয়া বিল আনতে চলেছে কেন্দ্র৷ ঝড়ের গতিতে ১৮ দিনে ২০টি বিল ও ১১টি অর্ডিন্যান্স পাস করানোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে কেন্দ্রের৷ যা সাম্প্রতিককালে নজির৷ যদিও বিল পাস করানোর প্রক্রিয়ায় আলোচনা ও ভোটাভুটির দরুন বেশ কিছুটা সময় লাগে৷ সেই বিল লোকসভায় পাস হলে আবার পাঠানো হয় রাজ্যসভায়৷ সেখানেও একপ্রস্ত ভোটাভুটি করা হয়৷ স্বাভাবিক ভাবেই এই অল্প দিনে কীভাবে মোট ৩১টি বিল ও অধ্যাদেশ পাশ করা যাবে, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা৷ তবে, পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের দেখভাল সংক্রান্ত নয়া বিল কার্যকর করতে চলেছে কেন্দ্র৷

দেখা যায়, লোকসভায় কোনও কোনও সময় একটি বিল নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটি করতে একটা গোটা দিন লেগে যায়৷ সেখানে এই নজির গড়ায় বিরোধীদের মনে সংশয় জেগেছে। তাঁদের বক্তব্য, সরকার বিনা আলোচনায় কিংবা নামমাত্র আলোচনায় এই বিল গুলি পাস করিয়ে নেওয়ার ছক কষছে৷  অন্যদিকে কেন্দ্র জানিয়েছে এই সিদ্ধান্ত বাধ্য হয়ে নিতে হয়েছে৷ কেননা, করোনা কালে সংক্ষিপ্ত অধিবেশন রয়েছে৷ ফলে, আর কোনও বিকল্প নেই৷

সরকারের মতে, করোনা সংক্রমণ যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে করে শীতকালীন অধিবেশন চলতি বছর আর করা যাবে কিনা সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারবেন না এখনই। সেই অনুযায়ী যদি শীতকালীন অধিবেশন না করা যায় তাহলে আসন্ন অধিবেশনই এই বছরের শেষ অধিবেশন। আর সেই কারণেই এই ৩১টি বিল ও অধ্যাদেশ দ্রুত পাশ করাতে চাইছে মোদী সরকার।

সরকারের পাশ করতে চাওয়া বিল গুলির মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিল হল, 'মেনটেন্যান্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অব পেরেন্টস অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেনস' সংশোধনী বিল। এটি বহু প্রতীক্ষিত এবং চর্চিত একটি বিল। এই বিলের সংশোধনীর মাধ্যমে বৃদ্ধ ও আর্থিকভাবে দুর্বল বাবা মায়ের প্রতি সন্তান ও নাতি নাতনিদের দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে। দায়িত্ব থেকে দূরে সরে গেলে অন্ততপক্ষে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও জেল হবে। এখনও পর্যন্ত এই আইন অনুযায়ী শুধুমাত্র আর্থিকভাবে যদি অবহেলা করা হয়, তবেই শাস্তি প্রদানের নিয়ম জারি আছে। সংশোধনী বিল পাস হলে সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত হবে। সন্তান বা নাতি নাতনিরা শুধু টাকা পাঠিয়ে দিয়েই সব দায় থেকে অব্যাহতি পাবেন না, বৃদ্ধ-বৃদ্ধার পুরো দায়িত্ব নিতে বাধ্য থাকবেন তাঁরা। পাশাপাশি এই বিল অনুযায়ী সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য প্রতিটি থানায় একজন করে নোডাল পুলিশ অফিসার নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে।

এই বিলের পাশাপাশি ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স বিল, কোম্পানি আইন সংশোধনী বিল ইত্যাদি পাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স বিল অনুযায়ী, সমস্ত সমবায় ব্যাঙ্ক রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আওতায় আসবে। পাশাপাশি দেশের সিংহভাগ গুরুত্বপূর্ণ বন্দরকে পোর্ট ট্রাস্ট বোর্ডের পরিবর্তে, একটি করে পৃথক পোর্ট অথরিটির আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে এই বিলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − seven =