দিনের নানা সময়ে বদলে যাবে বিদ্যুতের ইউনিট পিছু খরচ। বিদ্যুৎ সংকট কাটাতে নয়া পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় সরকারের। জানা যাচ্ছে, এখন থেকে দিন ও রাতের জন্য বিদ্যুতের মাশুল হবে ভিন্ন। ‘চাপ’ কমাতে দামের ওঠা-নামার সংস্কৃতি এবার আসতে চলেছে বিদ্যুৎ বিলেও। সরকারের বক্তব্য, চলতি গ্রীষ্মে যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তাতে স্বস্তির খোঁজে সন্ধ্যা হলেই বাড়ছে এসি, কুলারের ব্যবহার। ফলে বিদ্যুৎ গ্রিডগুলির উপর চাপ বাড়ছে। অতিরিক্ত চাপ টানতে না পেরে লোডশেডিং-এর ভোগান্তি বেড়েছে সর্বত্র। এই পরিস্থিতিতে লাগাম টানতেই নয়া সিদ্ধান্ত। বিদ্যুৎ আইনের নয়া সংশোধনীতে আসতে চলেছে এই নতুন নিয়ম। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘টাইম অফ ডে’ বা টিওডি ট্যারিফ। নয়া নিয়ম অনুযায়ী দিনের নানা সময়ে বদলে যাবে বিদ্যুতের ইউনিট পিছু দাম। দিনে ব্যবহার করা বিদ্যুতের বিলে যেমন অতিরিক্ত প্রায় ২০ শতাংশ ছাড় মিলবে, তেমনই রাতের জন্য গুনতে হবে বাড়তি টাকা। সূর্যাস্তের পর ব্যবহার হওয়া বিদ্যুতের জন্য দিতে হবে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ টাকা।
- কেন এই নিয়ম?
বর্তমানে বিদ্যুতের ইউনিট পিছু দাম স্থির। প্রতিটি রাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেই দাম স্থির করে। দাম স্থির হলেও, দিন-রাত মিলিয়ে বিদ্যুতের চাহিদার বদল হয়। দিনের বেলায় চাহিদা কম থাকলেও রাতের বেলা সেই চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। চাহিদা বাড়লে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলিকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হয়। বিদ্যুৎমন্ত্রকের দাবি, নতুন যে নিয়ম আসছে, সেখানে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়কে চিহ্নিত করা হবে, যে-সময় ইউনিট পিছু বিদ্যুতের দাম সস্তা পড়বে। কারণ, ওই সময় চাহিদা কম থাকবে। সাধারণ মানুষ বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলি যদি সেইসময় প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের ব্যবহার বেশি করে সেরে নেয়, তাহলেও কম বিল উঠবে। আবার যে-সময় বিদ্যুতের চাহিদা বেশি, সেই সময় যদি বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ে, তাহলে স্বাভাবিক দামের চেয়ে বেশি দাম চোকাতে হতে পারে গ্রাহককে। আগামী বছর থেকেই চালু হয়ে যাবে এই নয়া নিয়ম।
২০২৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রে ‘টিওডি’ মাসুল ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে। যাদের বিদ্যুৎ চাহিদা ১০ কিলোওয়াটের বেশি তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম লাগু হবে। কৃষিকাজ ছাড়া বাকি গ্রাহকদের জন্য এই নিয়ম চালু হবে তার ঠিক একবছর পরে। স্মার্ট মিটার বসানোর পর থেকেই নয়া মাসুল ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে খবর। কেন্দ্রের মতে, ‘টিওডি’ ব্যবস্থায় ব্যস্ত সময়, সোলার আওয়ার এবং অন্য সময়ের জন্য পৃথক মাসুল থাকায় গ্রাহকরা সেই মত বিদ্যুত খরচ করে বিল কমাতে পারবেন।
- কীভাবে কমাবেন বিদ্যুতের খরচ?
ওয়াশিং মেশিন, আয়রন বা রান্নার বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক জিনিসপত্রের ব্যবহার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেরে ফেললে বিদ্যুতের বিলের খরচ কমানো সম্ভব।
- কিন্তু, দিনের কোন সময়ে বিদ্যুতের দর সস্তা আর কোন সময় দামি, বুঝবেন কীভাবে?
এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, আগে থেকেই এব্যাপারে গ্রাহককে তথ্য দিয়ে দেওয়া হবে। কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, নয়া নিয়মে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল কমাতে পারবেন গ্রাহক।