নয়াদিল্লি: জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটাবে কেন্দ্র, শনিবার রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়ে একথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সীতারমনের বিরুদ্ধে বাংলার অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র একে 'প্রতারকের মার' বলে কটাক্ষ করেন। তাঁর কথায়, কেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে কেন্দ্রীকরণের পথে হাঁটতে চাইছে।
শনিবারের চিঠিতে জিএসটি ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিলেও, ঋণের দায় কেন্দ্র কোনওভাবেই নেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রের যুক্তি, ঋণ রাজ্যকেই নিতে হবে। এর বিরোধীতা করে অমিত জানান, রাজ্যগুলির ঘাড়ে ঋণের বোঝা আরও বাড়লে অর্থব্যবস্থা ভেঙে পড়তে বাধ্য। গত ২৭ আগস্ট জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন কোভিড অতিমারীকে 'ঈশ্বরের হাত' বলে মন্তব্য করেছিলেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, চরম আর্থিক সংকটে দেশের ভাঁড়ার, তাই রাজ্যগুলিকেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ঋণ নিতে হবে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র ঋণ গ্রহণের নীতিই কেবলমাত্র সহজ করতে পারে, ঋণ রাজ্যগুলিকেই নিতে হবে বলে জানান সীতারমন।
জিএসটি খাতে চলতি আর্থিক বছরে ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকার ঘাটতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সীতারমনের কথায়, রাজস্ব আদায় ধাক্কা খাওয়ার কারণেই রাজ্যগুলিকে জিএসটি বকেয়া দিতে পারছে না কেন্দ্র। এরপরেই সবকিছুকে 'ঈশ্বরের হাত' বলে অভিহিত করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। এর জবাবে অমিত মিত্র পাল্টা বলেন, 'ভগবানের নামেই রাজ্যকে ক্ষতিপূরণের বকেয়া থেকে বঞ্চিত করতে পারে না কেন্দ্র।' তাঁর কথায়, বর্তমানে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে টাকা ধার করলে রাজ্য অর্থনীতি আরও চাপে পড়বে। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, ভাঁড়ার শূন্য থাকলে টাকা ছাপিয়ে ধার পরিশোধ করার ক্ষমতা আছে কেন্দ্রেরই, রাজ্যের নয়। সেখানে কেন্দ্র সরাসরি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নিতে পারে। পাশাপাশি অমিতের দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কও চায় কেন্দ্রই ঋণ নিক।
অমিত আরও বলেন, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে বিজেপি শাসিত অন্যান্য রাজ্যগুলিও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। নোট বাতিলের পর দ্রুত জিএসটি আইন কার্যকর করায় বর্তমানে দেশের অর্থনীতির অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে ২০১৬ অর্থবর্ষে দেশের জিডিপি ছিল ৮ শতাংশ সেখানে গত আর্থিক বর্ষে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ৪.৯ শতাংশে।