পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে সিবিআইয়ের অতি সক্রিয়তা! রাজ্যের ১৪টি পুরসভায় তল্লাশি

পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে সিবিআইয়ের অতি সক্রিয়তা! রাজ্যের ১৪টি পুরসভায় তল্লাশি

পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার রাজ্য জুড়ে তল্লাশি অভিযানে নামল সিবিআই। বুধবার কলকাতা থেকে জেলা, একাধিক দলে ভাগ হয়ে অভিযানে নামে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পুরসভা নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর এই প্রথম তৎপরতা শুরু করল সিবিআই। বুধবার সকালে নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতর থেকে সিবিআইয়ের টিম একাধিক দলে ভাগ হয়ে আলাদা আলাদা ঠিকানায় পৌঁছে যায়। রাজ্যের একাধিক সরকারি দপ্তরে হানা দেয় সিবিআইয়ের দল। তদন্তকারীদের একটি টিম এসে পৌঁছয় সল্টলেকের রাজ্য সরকারী দপ্তর নগরায়ন ভবনে।

সূত্রের খবর, দপ্তরের আধিকারিকদের থেকে পুর নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি সংগ্রহ করতে চায় আধিকারিকরা। সেই কারণেই এই অভিযান। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডাইরেক্টর অফ লোকাল বডিজ এর অফিসেও পৌঁছে যায় সিবিআই। ব্যারাকপুর, পানিহাটি, দক্ষিণ দমদম পুরসভাতেও এদিন তল্লাশি চালায় সিবিআই টিম। নিয়োগের আগে কী রেজোলিউশন পাশ হয়েছিল, যা যা পরীক্ষা হয়েছে তার খোঁজখবর নিচ্ছেন তদন্তকারীরা। এছাড়াও বিজ্ঞপ্তির কপি, প্রার্থীদের তালিকাও সংগ্রহ করবে CBI।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত অয়ন শীলের সল্টলেকের বাড়িতেও সিবিআই তল্লাশির খবর মিলেছে। তল্লাশির পাশাপাশি অয়ন শীলের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে খবর। এই বাড়িতে এর আগেও ইডি তল্লাশি চালিয়েছিল। সেই তল্লাশিতে পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতির নথি উদ্ধার করে তদন্তকারীরা। এর পরপরই ইডির হাতে গ্রেফতার হন অয়ন। এদিন তাঁর সল্টলেকের এফডি ব্লকের বাড়ি ছাড়াও চুঁচুড়ায় অয়ন শীলের ফ্ল্যাট এবং সংস্থা, দুটি জায়গাতেই পৌঁছেছে সিবিআই টিম। 

গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছে রাজ্যের একাধিক পুরসভাও। ব্যারাকপুর, পানিহাটি, দক্ষিণ দমদম পুরসভা ছাড়াও কাঁচরাপাড়া, নিউ ব্যারাকপুর, কামারহাটি, টিটাগড়, উত্তর দমদম পুরসভাতেও সিবিআই টিম পৌঁছে তল্লাশি শুরু করে। সকাল ১১টা নাগাদ, শান্তিপুর পুরসভায় যান সিবিআই আধিকারিকরা। পুরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। পুর আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। সিবিআইয়ের দলের সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও।

রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়েই পুরসভায় নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির হদিশ পান তদন্তকারীরা। অভিযোগ ওঠে এক্ষেত্রেও টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছে হাজার হাজার চাকরি। এরপরই তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় সংস্থা। দেখা যায় রাজ্যের প্রায় সমস্ত পুরসভায় নিয়োগ হয়েছে ধৃত অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজেনের মাধ্যমে। এরপরই এই রহস্যের কিনারা করতে ময়দানে নামে সিবিআই। FIR করার পরে এটাই প্রথম তল্লাশি অভিযান সিবিআইয়ের। ২০১৪ সালের পর থেকে রাজ্যের এই পুরসভাগুলিতে কীভাবে নিয়োগ হয়েছে?  কতজনকে নিয়োগ করা হয়েছে? কী পদ্ধতিতে প্রার্থী বাছাই হয়েছে? তদন্তে সেই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − seventeen =