কলকাতা: রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হতে ছয় মাসেরও কম সময় বাকি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি-র চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। রাজ্য বিধানসভায় ২৯৪ টি আসনের মধ্যে ২০০ জয়ের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা প্রাক্তন সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। এদিকে মমতা রাজ্যের দিকে দিকে সভার আয়োজন করেছেন। বঙ্গে ভোট রাজনীতি তপ্ত হচ্ছে। কিন্তু এর মাঝেই তৃণমূলের নির্বাচনী কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোরকে দলের কিছু সদস্য খুব একটা পছন্দ করছেন না – এমন শোনা গিয়েছে। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আশা নেতারা প্রশান্ত কিশোরের দিকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সম্প্রতি পিকে রাজ্যে বিজেপিকে টুইটারে চ্যালেঞ্জ করেছেন।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির সাথে ছিলেন প্রশান্ত কিশোর (পি কে)। এরপর কংগ্রেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে কৌশলবিদ হিসাবে কাজ করেছেন পিকে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে প্রত্যাশিত ফলাফল না হওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব পান তিনি। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন পিকে। কিন্তু, তার কাজকর্মে ক্ষিপ্ত অনেক নেতা। তা কি তৃণমূলকে ভাবাচ্ছে? তৃণমূল সাংসদের সংখ্যা বাংলায় ৩৪ থেকে ২২ এ নেমেছে। জেলা ও ব্লক স্তরের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ এই জন্য দায়ী, মনে করেছে পার্টি। ওই সময় মেরুকরণের রাজনীতিও তৃণমূলকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল মনে করা হয়। সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশান্ত কিশোরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
সূত্রের খবর, পিকে এবং তার সংস্থা তৃণমূল স্তরে পার্টিতে কিছু পরিবর্তন চেয়েছেন। তা পুরোনো নেতারা অনেকে তা ভাল ভাবে নেননি। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর ‘কাট মানি’ ইস্যুটি বড় হয়ে ওঠে। কাট মানি ফেরতের ঘটনাগুলিকে টার্গেট করে বিজেপি। কিছু পুরান নেতারা প্রশান্ত কিশোরের দিকে আঙ্গুলও তোলেন পর্দার আড়ালে। কোচবিহার জেলার টিএমসির বিধায়ক মিহির গোস্বামী ১৯৯৯ সাল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দলটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ছিলেন। জল্পনা চলছে যে, তিনি বঙ্গ নির্বাচন সামনে রেখে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। তাই হয়েছে। তিনি অনেকবার বলেছেন, তৃণমূল আর আগের মত নেই। অনেকে এও অভিযোগ করেছে ব্লক, জেলাস্তরে সংগঠনে পরিবর্তন করা হল। কিন্তু, দীর্ঘদিন সংগঠন করে আসা পুরানো নেতাদের মতামত নেওয়া হল না।
তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম, কংগ্রেস এবং প্রশান্ত কিশোর (পি কে) – এই চার রাজনৈতিক শক্তি এক হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। সরাসরি না হলেও প্রচ্ছন্নে। আবহে। – এমনই আশঙ্কা করছে বিজেপি। এমন হতেও পারে, ধারণা গেরুয়া শিবিরের। পাল্টা পরিকল্পনাও তৈরি রাখা হচ্ছে। তবে, তৃণমূলের অন্দরে পি কে-এর বিরুদ্ধে ওঠা গুঞ্জনকে আরও বড় করতে চাইছে বিজেপি। বিজেপি চায় পি কে-র বিরুদ্ধে ছাই চাপা আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠুক। কলকাতার ৬ নম্বর মুরালিধর সেন লেনের এক নেতার কথায়, “পিকে’র বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তৃণমূলে বিদ্রোহ শুরু হয়েছে। যত হবে, তত সুবিধা আমাদের।’