কলকাতা: বিজেপি ক্ষমতায় এলে দিলীপ ঘোষই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবেন এমন আলোচনা সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল হোক চায় না বিজেপি। বিজেপি সূত্রে খবর, স্পর্শকাতর বিষয়টি এত সহজে প্রকাশ্যে আনতে চাইছে না দল। বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটি অভ্যন্তরীণ বনাম বহিরাগত বিতর্ক বাংলায় তৈরি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বহিরাগত বলা হয়েছে। বিতর্কের ঝড় উঠেছে। বাংলায় বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীত্বের মুখ কে, এই নিয়ে বিস্তর চর্চা হচ্ছে।
পরবর্তী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে এমপি সৌমিত্র খাঁ-এর পছন্দ হলেন রাজ্য বিজেপি প্রধান দিলীপ ঘোষ। তবে, এই মন্তব্য করায় দলের অন্দরে কথা শুনতে হয়েছে সৌমিত্রকে। সৌমিত্র বলেছিলেন দিলীপ ঘোষ নেতা। তিনি বিয়ে করেননি এবং সংসারও করেননি। তিনি অল্প বয়স থেকেই সংঘের হয়ে কাজ করছেন এবং পশ্চিমবঙ্গে যখন তাঁকে বিজেপির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তখন বিজেপি কোথাও ছিল না। দার্জিলিং থেকে জঙ্গলমহল পর্যন্ত লড়াই করেছিলেন। প্রচুর লোকেরা তাকে ধরে রাখতে চাইছেন। দিলিপ ঘোষ একদিন রাজ্য পরিচালনা করবেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী হবেন। তিনি সাম্প্রতিক বিজেপিতে শুভেন্দু অধিকারিকেও একটি ভূমিকার উল্লেখ করে বলেছেন। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে তৃণমূল ধ্বংস হবে। তার নেতৃত্বে পুরো দল ভেঙে যাবে।
দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, “তিনি (সৌমিত্র খান) আমার প্রতি বিশ্বাস রেখেছেন। আশা করা যায় যে আমার কর্মীরা এটি বলবে। চিন্তার কিছু নেই। অন্যেরা এতে সমস্যা দেখতে পাবে।” উল্লেখ্য, তাঁরকেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম উল্লেখ করেননি।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী কে হতে পারেন তা নিয়ে ‘ভাইরাল’ চর্চায় কেন কেন্দ্রীয় পার্টি বিরক্ত তা বুঝে নেওয়া যাক। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হোক তা দলের অভ্যন্তরে অনেকে চাইলেও আম জনতা তাকে কতটা গ্রহণ করবেন তা নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে দিলীপের বিরুদ্ধ তার দলের কিছু শিবির এই বিষয়ে যে খুশি হবে না তাও আলোচিত হয়েছে। একাধিক মুখ্যমন্ত্রীত্বের দাবিদার হতে পারেন বলে শোনা গিয়েছে। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি এবং ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় আবার বঙ্গ রাজনীতিতে ফিরে এসেছেন। তিনিও মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হতে পারেন বলে জোর আলোচনা। অন্যদিকে, অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও পিছিয়ে নেই। বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি এবং রামকৃষ্ণ মিশনের সক সাধুর নাম উঠে আসছে। কিন্তু, এই স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে ‘বটতলার আলোচনা’ চায় না বিজেপি।
কিছুদিন আগেও কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলতে গেলেন বাংলায় বিজেপির কোনও মুখ্যমন্ত্রীত্বের মুখ নেই? বিধানসভায় বিজেপি সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণ করে তবেই মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করবে, এমন ইঙ্গিত আগামী বিধানসভা নির্বাচনের ৮ মাস আগেই দিয়ে রেখেছেন কৈলাস। কৈলাসের স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, বাংলায় দল ক্ষমতায় আসবে। বিধানসভায় দল, কেন্দ্রীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা করে তবেই নেতা ঠিক করবে।