কলকাতা: আগামী বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। শুধু তাই নয়, ভোটে জিতে মানুষের জন্য কাজ করতে এতই মরিয়া বিজেপি, যে এখন থেকেই বেকারদের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে কার্ড বানিয়ে ফেলেছিলেন তাঁরা। কথা ছিল, ভোটের আগে ঘরে ঘরে গিয়ে তা বিলি করবেন। কিন্তু চাকরির এই ‘টোপ’ থেকে আপাতত পিছু হটতে হল পদ্ম শিবিরকে।
ভোটের আগেই বেকারদের চাকরির কার্ড দেওয়ার জন্য বিজেপির এই কর্মসূচি ভালো চোখে দেখেনি রাজনৈতিক মহল। বিপরীত দলগুলি তো বটেই, গেরুয়া দলের অভ্যন্তরেও এ নিয়ে শুরু হয়েছিল চাপানউতোর। তাই ঘরে বাইরে নানা চাপের মুখে পড়ে অবশেষে এই কর্মসূচি থেকে পিছু হটতে হয়েছে দিলীপ ঘোষ, সৌমিত্র খাঁ’দের।
বস্তুত, গত ১৩ ডিসেম্বর এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের নতুন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিলেন। বলা হয়েছিল, চাকরির প্রতিশ্রুতির কার্ডগুলি তাঁরা রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের মধ্যে বিলি করবেন। এবং কয়েক মাস পর ক্ষমতায় এলে তাঁদের চাকরির ব্যবস্থা করবেন। এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ জানিয়েছিলেন, ‘‘আর চার মাসের মধ্যেই বিজেপি ক্ষমতায় আসছে। তাই এখন থেকেই এ ভাবে কর্মপ্রার্থী যুবক-যুবতীদের নাম-ঠিকানা নথিভুক্ত করে রাখা হবে।’’ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ও।
ভোটের মাত্র কয়েক মাস আগে রাজ্যের মানুষকে এই ধরণের চাকরির ‘টোপ’ দেওয়ার চরম বিরোধিতা করেছিল তৃণমূল তথা বাম-কংগ্রেস জোট। পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা ছিল, এভাবেই রাজ্যের চাকরি প্রার্থী যুব সমাজ এবং তাঁদের পরিবারের ভোট পকেটে পড়তে চায় বিজেপি। ফলে এ নিয়ে শুরু হয় জোর রাজনৈতিক তরজা। সূত্রের খবর, শুধু দলের বাইরেই নয়, পদ্ম শিবিরের অন্দরেও চাকরির প্রতিশ্রুতি কার্ড নিয়ে শুরু হয়েছিল মতানৈক্য। অনেকেই বলেছিলেন, ক্ষমতায় আসার আগেই চাকরির কার্ড নিয়ে বাড়ি বাড়ি গেলে হতে পারে দুর্নীতি। আর তা থেকে দলের ভাবমূর্তিতে আঁচ লাগার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় নি। তাছাড়া, সরকারি চাকরি যোগ্যতা প্রমাণ করেই পাওয়া সম্ভব। তা না করলে ভবিষ্যতে জটিলতা তৈরি হবে বলেও অনেকে মতপ্রকাশ করেছিলেন। এহেন পরিস্থিতির মুখে পড়ে আপাতত চাকরির প্রতিশ্রুতি কার্ডের কর্মসূচী বাতিল করা হয়েছে, তেমনটাই খবর গেরুয়া শিবির সূত্রে। এ ব্যাপারে দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায় কিংবা সৌমিত্র খাঁর কোনোরকম প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করবো না।”