কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে একের পর এক অনিয়ম, কলকাতা হাইকোর্টে মামলার জেরে জেরবার রাজ্য৷ মেধা তালিকা চূড়ান্ত অনিয়মের অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া পুরোপুরি বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্ট৷ একই সঙ্গে প্রায় ৩ বছর পর প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিতে চলেছে রাজ্য৷ ১৬ হাজার ৫০০ শিক্ষক শূন্যপদে নিয়োগের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে মামলা৷ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের এজলাসে সেই মামলা বিচারাধীন৷ আর এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ‘অপ্রচারে’র বিরুদ্ধে সরব হলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ দিলেন শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বড় আশ্বাস৷
আজ সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামী মাসের শুরুতেই রাজ্য প্রথম সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ হবে৷ একইসঙ্গে ১৬,৫০০ শিক্ষক শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ শুরু হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ আদালতের রায় অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সাঁওতালি ভাষায় যে শিক্ষক নিয়োগ করছি, ৪৭৫ শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যে শেষ হয়ে যাবে৷ আমরা পরীক্ষার দিন জানিয়ে দিয়েছি৷ ২২টি কেন্দ্র পরীক্ষা নেওয়া হবে৷’’
প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আদালতের যে সমস্ত নির্দেশাবলী হয়েছে, সেই নির্দেশ অনুযায়ী আমরা বলেছি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং এসএসসিকে, তারা যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করে৷’’ শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্রকে করে একের পর এক মামলার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি৷ জানান, ‘‘অপপ্রচার, মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করছে। সেটা সঠিক নয়। আদালতের নির্দেশে ১৬,৫০০ শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ হবে৷ আগামী ৩১ জানুয়ারি প্রাথমিক টেটের যে পরীক্ষা বাকি আছে, আড়াই লক্ষ আবেদনকারীর পরীক্ষা হবে৷’’
কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে, ১৬ হাজার ৫০০ শিক্ষক শূন্যপদে নিয়োগের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে মামলা গোটা প্রক্রিয়া জল ঢেলে দেবে না তো? ২০১৭ সালে টেটের আবেদন নেওয়ার পর ২০২১ সালে এসে যদি পরীক্ষা নেওয়া হয়, তাহলে নিয়োগ হবে কবে? আগামী মাসে নির্বাচনী বিধি ঘোষণা হয়ে গেলে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে বাতিল হওয়া নিয়োগ আদৌও শেষ হবে? ১৯৯৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত একটানা শিক্ষক নিয়োগ হলেও তৃণমূল সরকারের আমালে তা হয়নি৷ ভোটের মুখে পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া আদৌও শেষ করা সম্ভব? প্রশ্ন চাকরিপ্রার্থীদের৷