কলকাতা: করোনা আতঙ্কে ইতিমধ্যেই বাংলার সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার৷ কিন্তু পৃথক পৃথক দপ্তরের স্কুল ছুটির বিজ্ঞপ্তি ঘিরে তৈরি হয়েছে চূড়ান্ত ধোঁয়াশা৷ বিজ্ঞপ্তির বয়ান ঘিরে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শিক্ষকদের একাংশ৷ কোন বিজ্ঞপ্তি সঠিক? মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জারি করা প্রেস রিলিজ, নাকি শিক্ষা দপ্তর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি? ছুটির বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শিক্ষক মহলে৷ যদিও এবিপি আনন্দকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে, শিক্ষকদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
আজ দুপুরে সপ্তম রাজ্য হিসাবে বাংলায় সমস্ত স্কুল-কেলজ বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তর৷ স্কুল ছুটির ঘোষণা হলেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া হবেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ আগামী সোমবার থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে৷ আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সমস্ত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা৷ বন্ধ থাকবে সমস্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও৷ স্কুলের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা নেওয়ার কাজ বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে৷ একই সঙ্গে এসএসকে, এমএসকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে৷ তবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়সূচিতে কোনও পরিবর্তন হবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তর থেকে ঘোষণা করা হয়েছে৷ ৩০ মার্চ পরিবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু, বিপত্তি তৈরি হয়েছে শিক্ষা দপ্তর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি ঘিরে৷ তবে, পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের জারি বিজ্ঞপ্তিতে তেমন কিছুই বলা হয়নি৷
শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানিয়েছেন, ‘‘স্কুল ছুটি নিয়ে দু’রকম নির্দেশিকা কেন? করোনা ভাইরাসের কারণে রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আগামী ১৬ মার্চ থেকে ৩১মার্চ পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন৷ আবার শিক্ষা দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছেন ক্লাস সাসপেনশনের কথা৷ ক্লাস সাসপেনশন মানে বিদ্যালয় সম্পূর্ন বন্ধ নয়৷ কেবলমাত্র ক্লাস বন্ধ থাকবে৷ তাহলে কী নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীদের বিদ্যালয়ে যেতে হবে? এ ব্যাপারে দু'ধরনের নির্দেশিকা কেন? যদিও বিদ্যালয়গুলিতে একাদশ ও উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা চলছে৷ সেগুলি যথারীতি চলবে৷ কিন্তু অন্যান্য দিনগুলি শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীরা কী করবেন, সে ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই। বিগত দিনে এরকম নির্দেশিকাকে ঘিরে বহু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল৷ বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে পরিষ্কারভাবে নির্দেশিকা জারি করা হোক৷ কোন নির্দেশিকা মেনে চলা হবে তা পরিষ্কারভাবে জানানো হোক৷ ’’