নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় সরকারি স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সেন্ট্রাল টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট বা সিটেট-এ আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করল সিবিএসই (সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন)। পরীক্ষা হবে ৫ জুলাই, ২০২০।
পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য বিস্তারিতভাবে জানা যাবে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ctet.nic.in-এ। সিটেট-এর ১৪ তম সংস্করণের জন্য অনলাইনে আবেদন করা যাবে ২৪ জানুয়ারি,২০২০ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ পর্যন্ত। দেশের ১১২ টি শহরে ২০ টি ভাষায় এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রার্থীরা ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকাল সাড়ে তিনটের মধ্যে ফি জমা করতে পারবেন। আবেদনে কোনো ভুল-ত্রুটি থাকলে অনলাইনে সংশোধনের সময়সীমা ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে ২৪ মার্চ ২০২০। অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া যাবে ২০ জুন ২০২০।
সিটেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংক্রান্ত তথ্য-
সিটিইটি ২০২০ পরীক্ষার ধরণ অনুসারে দু ধরনের প্রশ্নপত্র থাকে। পেপার-ওয়ান বা প্রথম প্রশ্নপত্র এবং পেপার-টু বা দ্বিতীয় প্রশ্নপত্র।
প্রথম প্রশ্নপত্রটি তাদের জন্য যে প্রার্থীরা ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত শিক্ষকতা করতে আগ্রহী। দ্বিতীয় প্রশ্নপত্রটি তাদের জন্য যারা ক্লাস সিক্স থেকে ক্লাস এইট পর্যন্ত শিক্ষকতা করতে আগ্রহী। সকল শ্রেণির, অর্থাৎ ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস এইট পর্যন্ত শিক্ষকতার জন্য, দুটি প্রশ্ন পত্রের পরীক্ষাই দিতে হবে।
দু’ধরনের প্রশ্নপত্রে জন্যর আবেদনের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্দিষ্ট করা হয়েছে । তাই ফর্ম ফিলাপের সময় এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষক পদে আবেদনের জন্য প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা –
উচ্চমাধ্যমিকে ৫০% নম্বর। প্রাথমিক শিক্ষার ২ বছরের ডিপ্লোমা বা ডিপ্লোমার শেষ বছর চলছে।
উচ্চমাধ্যমিকে কমপক্ষে ৪৫% নম্বর। দু বছরের প্রাথমিক শিক্ষার ডিপ্লোমা থাকতে হবে বা ডিপ্লোমার শেষ বছর চলছে। ডিপ্লোমা এনসিটিই মান্যতা প্রাপ্ত হতে হবে ।
উচ্চমাধ্যমিকে কমপক্ষে ৫০% নম্বর। ৪ বছরের বিএলএড ডিগ্রি প্রাপ্ত বা ডিপ্লোমার শেষ বছর চলছে।
উচ্চমাধ্যমিকে কমপক্ষে ৫০% নম্বর। ২ বছরের স্পেশাল এডুকেশন ডিপ্লোমা আছে বা ডিপ্লোমা করছেন।
স্নাতক এবং প্রাথমিক শিক্ষার ২ বছরের ডিপ্লোমা বা ডিপ্লোমার শেষ বছর চলছে।
ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষক পদের জন্য প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা-
স্নাতক এবং ২ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা ডিপ্লোমা করেছেন বা করেছেন।
স্নাতকোত্তরে কমপক্ষে ৫০% নম্বর।১ বছরের বিএড প্রোগ্রাম করেছেন বা করছেন।
কমপক্ষে ৪৫% নম্বর প্রাপ্ত স্নাতক। ১ বছরের বিএড ডিগ্রি করছেন বা করেছেন (এনটিসিই মান্যতা প্রাপ্ত)।
উচ্চমাধ্যমিকে কমপক্ষে ৫০% নম্বর। ৪ বছরের বি.এল.এড ডিপ্লোমা বা চূড়ান্ত বছর।
উচ্চমাধ্যমিকে কমপক্ষে ৫০% নম্বর অর্জন করতে হবে এবং বিএ/ বিএসসি.বিএড বা বিএ.বি এড / বিএসসি.বিএড বা চূড়ান্ত বছর।
৫০% নম্বর সহ স্নাতক এবং বিএড (স্পেশাল এডুকেশন) করেছেন বা কর পাস করেছেন।
সিটিইটি পেপার ওয়ান-এ মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য একটি সঠিক অসশন আছে। পেপার ১ এর ৫ টি অংশ থাকবে – চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট এন্ড পেডাগজি, প্রথম ভাষা (ফার্স্ট ল্যাঙ্গুয়েজ), দ্বিতীয় ভাষা (সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ), ম্যাথেমেটিক্স, এবং এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ। মোট ১৫০ নম্বরের ১৫০ টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
সিটিইটি পেপার টু-এ মোট ১৫০ টি মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন থাকবে। এর ৫ টি ভাগ থাকবে – চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট এন্ড পেডাগজি, প্রথম ভাষা (ফার্স্ট ল্যাঙ্গুয়েজ), দ্বিতীয় ভাষা (সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ), ম্যাথেমেটিক্স, বিজ্ঞান (সায়েন্স-শিক্ষকের জন্য) এবং সামাজিক বিজ্ঞান(সোশ্যাল স্টাডিজ) সামাজিক বিজ্ঞান শিক্ষকের জন্য।
প্রতিটি সঠিক উত্তরে ১নম্বর দেওয়া হবে। এই প্রশ্নপত্রে, গণিত ও বিজ্ঞানের ৬০ টি এবং সামাজিক বিজ্ঞানের ৬০ টি প্রশ্নও থাকবে। বাকি অংশগুলি পেপার ওয়ানের মতোই থাকবে।
পরীক্ষার্থীদের আড়াই ঘন্টা মোট মোট দেড়শ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রতিটি প্রশ্নে ১ নম্বর করে থাকবে এবং মোট নম্বর ১৫০। এই পরীক্ষায় কোনও নেগেটিভ মার্কিং থাকবে না।
সাধারণ ও ওবিসি বিভাগে একটি প্রশ্নপত্রের জন্য আবেদন ফি ১০০০ টাকা, দুটি প্রশ্নপত্রের জন্য ফি ১২০০ টাকা। একইভাবে এসসি, এসটি ও প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি প্রশ্নপত্রের আবেদন ফি ৫০০টাকা এবং দুটি প্রশ্নপত্রের জন্য আবেদন ফি ১২০০ টাকা।
পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জনের জন্য সাধারণ বিভাগের আবেদনকারীদের পরীক্ষায় ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। অন্যদিকে, সংরক্ষিত বিভাগের আবেদনকারীদের ৫৫ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।
পরীক্ষা দুটি শিফটে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম শিফটে প্রথম পত্রের পরীক্ষা হবে সকাল ৯.৩০ টা থেকে ১২ টা এবং দ্বিতীয় শিফটে দুপুর ২ টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা হবে। শিক্ষকতা সংক্রান্ত কোনো কোর্স করা থাকলেই আবেদনকারী এই পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইন আবেদন ফর্ম জমা দেওয়ার পদ্ধতি:
১: সিটিইটি-র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ctet.nic.in-এ লগ ইন করতে হবে।
২: “অ্যাপ্লাই অনলাইন” লিঙ্কটিতে গিয়ে পেজটি খুলতে হবে।
৩: অনলাইন আবেদন ফর্ম পূরণ করে রেজিস্ট্রেশন নম্বর / অ্যাপ্লিকেশন নম্বর লিখে রাখতে হবে।
৪: সর্বশেষ ফটোগ্রাফ এবং স্বাক্ষরের স্ক্যান করা কপি আপলোড করতে হবে।
৫: ই-চালান বা ডেবিট / ক্রেডিট কার্ড এবং নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি জমা করতে হবে।
৬: রেকর্ড এবং ভবিষ্যতের রেফারেন্সের জন্য কনফরমেশন পেজ-এর প্রিন্ট আউট রাখতে হবে।
৭: প্রার্থীকে তার বিবরণে লিখতে হবে – নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, ক্লাস টেন-এর সার্টিফিকেট অনুসারে জন্ম তারিখ।
৮: অনলাইন সংশোধনের জন্য নির্দিষ্ট তারিখ শেষ হওয়ার পর সংশোধনের জন্য কোনও পরিস্থিতিতে কোনো বিশেষ অনুরোধ গ্রাহ্য হবে না।
পরীক্ষার ফলাফল সংক্রান্ত তথ্য-
সিটিইটি-র ফলাফল বোর্ডের ওয়েবসাইটে ঘোষণা করা হবে। পরীক্ষার পরে, সিটিইটির উত্তরপত্রও প্রকাশ করা হবে যা তার ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। যোগ্য প্রার্থীদের একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এই সার্টিফিকেট ৭ বছরের জন্য বৈধ হবে। কোনও প্রার্থীর সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে আবার সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। পরীক্ষায় ৬০% নম্বর প্রাপ্ত প্রার্থীরাই যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
২৭ জুলাই ২০২০ তারিখে পরীক্ষার ফলাফল জানা যাবে – ফলাফল জানতে সিটিইটিটির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট গিয়ে রেজাল্ট সিটিইটি ২০২০ (ওপেন লিঙ্ক)
নিজের রোল নম্বর লিখলে প্রাপ্ত নম্বরের স্টেটমেন্ট জানা যাবে। স্টেটমেন্টের প্রিন্ট আউট বের করা যাবে।