কলকাতা: গত কয়েকদিন ধরেই বিজেপি নেতা তথাগত রায় এবং অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের বাকযুদ্ধে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। মূলত টলি অভিনেত্রীর একটি পুরোনো টুইট ঘিরে এই বিতর্কের সূত্রপাত। বছর ছয়েক আগে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করা হয়েছিল, যেখানে শিবলিঙ্গের ওপর কনডোম পড়াচ্ছে বুলাদি। এই টুইটটি ভাইরাল হওয়ার পর বিজেপি নেতা তথাগত রায় সায়নীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তার পাল্টা মন্তব্য করেন অভিনেত্রীও।
দু’পক্ষের এই বাকযুদ্ধ রীতিমতো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। এরমধ্যেই গত শনিবার সায়নী আবার বিতর্কিত সেই টুইটটি ডিলিট করে দায় ঝাড়েন। তাঁর দাবি, ২০১৫ সালে করা এই টুইট নিজের অগোচরে ছিল। কারণ সেই সময় তাঁর অ্যাকাউন্টটি কোনও কারণে হ্যাক হয়েছিল। সেই সময় করা হয়ছিল এই টুইট। তবে ২০১৭ সালে অ্যাকাউন্ট ফেরত পাওয়ার পর অধিকাংশ বিতর্কিত পোস্ট ডিলিট করা হয়ছিল। কিন্তু কোনওভাবে এটি থেকে যায়। ফলে তিনি অজান্তেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দিয়ে ফেলেছেন।
যদিও সায়নীর এই মন্তব্যের পরেও মন গলেনি তথাগত রায়ের। বরং তিনি সটান চলে যান রবীন্দ্র সরবোর থানায়। অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার জন্য দায়ের করেন অভিযোগ। ভারতীয় দন্ডবিধি ২৯৫ এ ধারায় দায়ের হয় মামলা। যদিও অভিযোগ দায়েরের পরেও সায়নী নিজের অবস্থান থেকে একচুলও নড়বেন না, তা রবিবার স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন টুইটারের মাধ্যমে। এদিন তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিত্ত যেখা ভয় শূণ্য উচ্চ যেথা শির কবিতার একাংশ আপলোড করেন। ফলে তিনি কোনও কিছুর ভয়ে যে পিছিয়ে যাবেন না তা তিনি স্পষ্ট করেন। এর আগে অবশ্য সায়নী বিজেপির বিরুদ্ধে একাধিকবার মন্তব্য করেছিলেন। তবে কখনই তিনি এতবড় সমস্যায় পড়েননি। তবে এবার গেরুয়া বাহিনী সায়নীর ওপর বেজায় চটেছে তা কিন্তু একদমই পরিস্কার। যদিও, নেট ক্রাইম দমনে তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দাবি, যে ধারায় মামলা আনা হয়েছে, তা সর্বাধিক ৩ বছরের মধ্যে করার সংস্থান ছিল৷ কিন্তু তা হয়েছে ৫ বছর পর৷ ফলে, এই মামলা নাও টিকতে পারে৷
এড্স সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে তৈরি হয়েছিল শাড়ি পরিহিত অ্যানিমেটেড বুলাদি৷ ১৯৯৮ সালের পর কনডোম ব্যবহারের সচেতনতা প্রচারে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জনতার সামনে হারিজ করেছিল অ্যানিমেটেড ‘বুলাদি’কে৷ স্বাস্থ্যের প্রচার করা ‘বুলাদি’কে নিয়ে এর আগে কম বিতর্ক হয়নি৷ বর্তমানে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ‘বুলাদি’র প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলেও আজও বিতর্কে সেই ‘বুলাদি’, তবে এবার লেগেছে ধর্মের রঙ৷