দুর্ঘটনার করমণ্ডল দুর্ঘটনার বীভিষিকা স্মৃতি ওদের চোখে -মুখে। কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে যাওয়া সেই যাত্রীরা খুব কি ভালো আছেন? শারীরিক ক্ষত মিটে গেলেও মানসিক ক্ষত যে বেশ গভীর।যা পদে পদে চাক্ষুস করছেন ওড়িশার বালেশ্বরের এসসিবি মেডিক্যাল কলেজের চিকিত্সকরা। দুর্বিসহ সেই ছবি। ঠিক কী কী লক্ষণ দেখা যাচ্ছে আহতদের আচরণে সেই দিকে নজর দেওয়া যাক।
• করমণ্ডল দুর্ঘটনার আহত ১০৫ জন ভর্তি বালেশ্বরের এসসিবি মেডিক্যাল কলেজে
• এদের মধ্যে ৪০ জনের মানসিক অবস্থা মারাত্মক খারাপ
• রাতে ঘুমোচ্ছেন না বেশিরভাগই
• মাঝ রাতে জেগে উঠছেন অনেকেই
• চিত্কার কখনও আর্তনাদ, কখনও খুব জোরে হেসে উঠছেন
• কেউ বা পুরোপুরি কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন
কেন এই ধরণের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এই রোগের নামই বা কি, আদৌ কি এই ধরণের হতাশাজনক লক্ষণ থেকে মুক্তি পাবেন দুর্ঘটনা থেকে কোনওরকমে প্রাণে বাঁচা যাত্রীরা। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা ৪০ জনই পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে ভুগছেন। জেনে নেওয়া যাক, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার আসলে কী?
• মর্মান্তিক ঘটনা, সহিংসতা, দুর্যোগ, মৃত্য দেখা ব্যক্তি পিটিএসডিতে আক্রান্ত হতে পারেন
• পিটিএসডিতে আক্রান্ত হলে ব্যক্তির আচরণগত পরিবর্তন হয়
• ক্রোধ, দুশ্চিন্তা, বিরক্তি, অনিদ্রা বেড়ে চলে
• অনেকই এই রোগে মাদকাসক্ত হন
করমণ্ডল ট্রেন দুর্ঘটনার বিভত্সতা এতটাই মারাত্মক যে, সেই দুর্বিসহ দৃশ্য ৪০ জন আহত ব্যক্তির উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। অনেক সময়ই পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সেই কারণে মানসিক অবস্থানজনিত এই রোগ বেড়ে চলে বলে মনে করছেন চিকিত্সকরা। দুঃস্বপ্ন থেকে রাতের পর রাত জেগে থাকা, সবটাই এই রোগের লক্ষণ। করমণ্ডল দুর্ঘটনাকে শতাব্দীর অন্যতম মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা বলা হচ্ছে। তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনা একসঙ্গে। প্রাণ কেড়েছে ২৮৮ জনের। এখনও বহু মৃতদেহ শনাক্ত করা যায়নি। প্রিয়জনদের নিথর দেহের অপেক্ষায় বহু পরিবার। হয়ত এর শেষ আছে। তবে এই দুর্বিসহ দুর্ঘটনার স্মৃতি যে না ভোলার। হতাশার। আপাতত সেই হতাশার বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছেন ফিরে আসা মানুষগুলো।