নিজস্ব প্রতিনিধি: শাসক দল তৃণমূল নয়, কলকাতা পুলিশ তথা রাজ্য পুলিশই তাঁদের প্রধান প্রতিপক্ষ। এমনটাই মনে করছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত রাজ্যের পুলিশ পর্যবেক্ষকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর সংবাদ মাধ্যমে এমনটাই দাবি করেছেন শুভেন্দু। ঘটনা হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও বারবার প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। পাল্টা বিজেপির বহু অভিযোগ রয়েছে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে।
এই পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অন্যতম প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে রাজ্য পুলিশ, এমনটাই মনে করছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সূত্রে রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের কমিশন যাতে নিয়ন্ত্রণ করে, সেই আবেদন তিনি জানিয়েছেন রাজ্যের পুলিশ পর্যবেক্ষকের কাছে। রাজ্যের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক অনিল কুমার শর্মার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এমনই আবেদন করেছেন শুভেন্দু। নিরাপত্তা ইস্যুতে একাধিক আর্জি তাঁর কাছে জানান শুভেন্দু। শুভেন্দুর কথায়,”২০২১ সালের ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআই ৬১টি এফআইআর করেছে। ১৫টি রাজ্যে ভোট হয়েছে, বাংলার মতো কোথাও হিংসা হয়নি। পঞ্চায়েত ভোটে আদালতের নির্দেশে ৮২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল। কিন্তু বাহিনীকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। ৫৫ জন খুন হয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বহু মানুষ ভোটই দিতে পারেননি। তৃণমূল দুর্নীতি ছাড়া কিছুই করেনি। তাই আমরা চাই প্রশাসন অবাধ শান্তিপূর্ণ ভোটের ব্যবস্থা করুক। বাংলার ভোটের পুলিশই প্রধান প্রতিপক্ষ।”
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের নানা প্রান্তে বহু রাজনৈতিক কর্মী খুন হন। বিজেপির অভিযোগ বেছে বেছে তাদের দলে কর্মী সমর্থকদের খুন করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। কিন্তু প্রশ্ন হল যেহেতু কড়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রহরায় ভোট হবে, তাহলে রাজ্য পুলিশকে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে কেন দেখছেন শুভেন্দু? আসলে যতই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকুক না কেন, রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন সহযোগিতা না করলে সুষ্ঠু ভোট যে সম্ভব নয় সেটা ভাল করেই বোঝেন বিরোধী দলনেতা।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা যে এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পাবেন তাঁরা সেখানকার ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাঁদের যেভাবে চালিত করা হবে, যেখানে যেখানে যেতে বলা হবে, সেভাবেই তাঁদের ডিউটি পালন করতে হবে। অতীতে বহুবার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে অযথা বহু জায়গায় বসিয়ে রেখেছেন রাজ্য প্রশাসনের একশ্রেণির কর্তা ব্যক্তিরা। মূলত বিরোধীরাই এমন অভিযোগে সরব হয়েছেন। মূলত সেই কারণেই শুভেন্দু মনে করছেন পুলিশ তাঁদের অন্যতম প্রধান প্রতিপক্ষ। তাই নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্বে রাজ্য পুলিশকে কোন ভূমিকায় দেখা যায় সেটা নিয়ে কৌতূহল থাকছেই।