তমলুক: বিতর্কিত মন্তব্য এবং শুভেন্দু অধিকারী যেন এক কয়েনের এপিঠ-ওপিঠ হয়ে গেছে। একাধিক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যে রাজ্য-রাজনীতির উত্তেজনার পারদ দিন দিন বাড়ছে। গতকাল কোলাঘাটে বিজয়ের শুভেচ্ছা জানাতে এসে তিনি মন্তব্য করেন, মানুষের কাজ করতে কোন পদ লাগে না! শুভেন্দুর এই মন্তব্যে বিতর্কের জন্ম নেয়। যদিও ফের একবার তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করে বঙ্গ রাজনীতির উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। এবার তাঁর কথায়, আমি আমি করাই হল সর্বনাশের মূল!
নিউ দীঘায় মহিলা কল্যাণ প্রতিষ্ঠানের ভগিনী নিবেদিতার ১৫০ তম জন্মদিন উদযাপনের অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, একার দ্বারা কারোর পক্ষে কোন কাজ করা সম্ভব নয়। সকলকে একসঙ্গে মিলে কাজ করতে হয়। এখানে প্রত্যেকের প্রশংসা করা দরকার, কারণ একক শক্তিতে কেউ কাজ করতে পারে না। তারপরেই স্বামী বিবেকানন্দকে উদ্ধৃত করে শুভেন্দু বলেন, ‘আমি আমি হল সর্বনাশের মূল, যারা আমরা আমরা করে, তারাই টিকে থাকে!’ আপাতদৃষ্টিতে এই বক্তব্যের কোন অর্থ না থাকলেও, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই মন্তব্য করে আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরোক্ষ বার্তা দিতে চাইছেন শুভেন্দু। কারণ সকলেই জানেন, রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকারিতা মূলত একজনের ওপর নির্ভরশীল। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণে শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এর আগে একাধিকবার নিজের পথ হারিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এখন শুধু মন্ত্রী পদ রয়েছে তাঁর। আর কিছু মাস পরেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিজয়বার্তায় এই ধরনের মন্তব্য বাংলার রাজনৈতিক মহলের জল্পনা উস্কে দিল বইকি। শুধু এই ইস্যুতে, পরিযায়ী ইস্যুতেও মুখ খোলেন শুভেন্দু অধিকারী। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রাক্কালে পরিযায়ী ইস্যুতে অস্বস্তিতে পড়েছিল তৃণমূল। পরে একাধিকবার ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ চেষ্টা করলেও খুব একটা লাভ হয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। একাধিকবার বিরোধীদের আক্রমণ করতে হয়েছে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে। অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি সংযোগ নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। যদিও সবশেষে সমস্ত বিতরকের অবসান ঘটিয়েছেন খোদ রাজ্যের মন্ত্রী। কিন্তু একবার ফের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করে কিছু একটা ইঙ্গিত হয়তো দিতে চাইলেন তিনি। -ফাইল ছবি৷