কলকাতা: গতকাল রাতের একটা বৈঠক রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের স্বস্তি অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছিল। উত্তর কলকাতার এক বাড়িতে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের তত্ত্বাবধানে বৈঠকে বসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, তৃণমূলের ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের পর সৌগত রায় সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছিলেন, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলেই রয়েছেন, সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। তবে এই দাবি করে এখন চরম অস্বস্তিতে তিনি। কারণ ইতিমধ্যেই স্বয়ং শুভেন্দু অধিকারী তাকে মেসেজ করে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই বৈঠক নিয়ে অসন্তুষ্ট, কেন বৈঠকের কথা এই ভাবে তাকে না জানিয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হলেও সেই নিয়োগ প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। এখন চরম অস্বস্তির মধ্যে কার্যত হাল ছেড়ে দিয়েছেন সৌগত।
এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে সৌগত রায় বলেন, গতকাল তিনি যা বলেছিলেন, সত্য এবং নিষ্ঠার সঙ্গে বলেছিলেন। এখন যদি সুভেন্দু অধিকারি নিজের মন বদলে ফেলেন, তাহলে বাকি যা বলার সেটা তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানাবেন। এ বিষয়ে তিনি এখন আর কিছু বলতে পারবেন না বলে স্পষ্ট জানান তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বৈঠকের পরে শুভেন্দু অধিকারীর সাংবাদিক বৈঠক করার কথা ছিলই। এখন তিনি যদি নিজের মত পাল্টে ফেলেন, তাহলে সেই বিষয়ে যা বলার তাঁকেই বলতে হবে।
এদিকে সূত্রের খবর, বৈঠকের কথা সংবাদমাধ্যমে জানানোর পরে সৌগত রায়ের ওপর প্রবল অসন্তুষ্ট হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তাকে মেসেজ করে স্পষ্ট জানিয়েছেন, এইভাবে সংবাদমাধ্যমে সবকিছু জানিয়ে দেওয়া একেবারেই অনুচিত হয়েছে। শুভেন্দু জানিয়েছেন, এইভাবে একসঙ্গে কাজ করা মুশকিল। তার বক্তব্যের এখনো সমাধান করা হয়নি, তার আগেই সংবাদমাধ্যমকে সব জানানো হয়েছে। আগামী ৬ ডিসেম্বর তাঁর সাংবাদিক বৈঠক করার কথা ছিল বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, সমাধান সূত্র বের না করেই সব তাঁর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে! এই পরিস্থিতিতে এককথায় বলা যায়, গতকাল রাতের বৈঠক ‘সফল’ হওয়ার পরেও, দুপুরে ছন্দপতন ঘটেছে। প্রসঙ্গত, গতকাল রাতে উত্তর কলকাতার একটি বাড়িতে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের নির্বাচনী কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। সেই সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়। প্রায় দুই ঘণ্টার কাছাকাছি বৈঠক হওয়ার পর তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয় সব ধন্দ মিটে গেছে, বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে। সেই খবরের পরেই কার্যত ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল বিজেপি। তবে এখন এই খবর প্রকাশ্যে আসায় আবারো সুর চড়িয়েছে বঙ্গ গেরুয়া শিবির।