কলকাতা: বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস জুনিয়ার বেসিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সর্বানী মল্লিক। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই একটি বিতর্কিত বইকে সিলেবাসে অন্তর্গত করার দায়ে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। বইটিতে ইংরাজি শব্দ 'আগলি' অর্থাৎ কুৎসিতের উদাহরন দিতে একজন কালো মানুষের ছবি দেওয়া হয়েছে। বিতর্ক এখানেই। বর্ণ বৈষম্যবাদকে প্রাধান্য দেওয়ার যুক্তিকে ওই শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করা হয়। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট ওই শিক্ষিকার সাসপেন্ড অর্ডার খারিজ করে দিয়েছে।
'চাইল্ড স্টাডি' নামক ওই বইয়ে বর্ণ বৈষম্যবাদকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন সরকার পক্ষের আইনজীবী। কিন্তু হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম সিনহা জানিয়েছেন, বর্ণবৈষম্য নিয়ে কথ বললেও এর জন্য মধ্য শিক্ষা পর্ষদ কাউকে সাসপেন্ড করতে পারে না। অন্যদিকে শিক্ষিকার আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় শিক্ষিকা যে সহকারি দু’জন শিক্ষকের অনুমোদনে ওই বই নির্বাচন করেছিলেন, তাঁর প্রমাণ আদালতে পেশ করেছেন। অন্যদিকে বিচারপতি সিনহা জানিয়েছেন, প্রি-প্রাইমারি সেকশনের বই নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা নেই।
ফলে বই অনুমোদনের ক্ষেত্রে যে অভিযোগ ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, তাঁর সদুত্তর সরকারি আইনজীবীদের কাছে ছিল না। অন্যদিকে মধ্য শিক্ষা পর্ষদের এই বিষয়ে সাসপেন্ড করার নিয়ম না থাকায় সরকারি আইনজীবীরা আদালতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। ওই মহিলার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছিল, কিন্তু ঠিক কোন বিষয়ের জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করা হবে তার নির্দিষ্ট কোনও যুক্তি দিতে পারেনি সরকারি আইনজীবীরা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কলকাতা হাইকোর্ট ওই শিক্ষিকার পক্ষে রায় দিয়ে, সাসপেন্ডের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে।