অন্যের নামে ৫০টি সিম কার্ড ব্যবহার সুশান্তের, মৃত্যু মামলায় ক্রমশ জট

বিহার পুলিশ মামলা হাতে নেওয়ার পর থেকেই রিয়া ও তাঁর পরিবার নিখোঁজ। এ প্রসঙ্গে বিহার পুলিশের ডিরেক্টর গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে এক সাক্ষাৎকারে রিয়াকে সামনে আসতে অনুরোধ করেছেন।

মুম্বই ও বিহার: সুশান্ত সিং রাজপুতের বাবা কেকে সিং রাজপুতের করা এফআইআর-এর পর তদন্তে নেমে বিহারের রাজীব নগর থানার পুলিশকর্মীরা জানতে পেরেছেন সুশান্ত অন্যদের নামে নেওয়া ৫০টি সিম কার্ড ব্যবহার করেছিলেন। সেই সিম কার্ডগুলির মধ্যে একটি ছিল সুশান্তের রুমমেট সিদ্ধার্থ পাঠানির নামে। পুলিশকে সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, সুশান্ত নিজেই তাঁকে ওই সিম কার্ড এনে দিতে বলেছিলেন।

 

অন্যদিকে, সুশান্তের মৃত্যুর ঠিক ছ’দিন আগেই তাঁর ম্যানেজার দিশা সালিয়ান আত্মহত্যা করেছিলেন। দিশার মৃত্যুর সঙ্গে সুশান্তে'র মৃত্যুর কোনও যোগ আছে কি না তা নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে বিহার পুলিশ। যদিও দিশার বাড়ির লোক জানিয়েছেন, সুশান্তের সঙ্গে দিশার মৃত্যুর কোনও যোগ ছিল না। অন্যদিকে, সুশান্ত মৃত্যু মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত তথা সুশান্তের প্রেমিকা অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী মামলা বিহার থেকে মুম্বই এ নিয়ে আসার আবেদন করেছিলেন আদালতে। 

 

এ বিষয়ে আদালত এখনও কোনও রায় দেয়নি। কিন্তু বিহার পুলিশ মামলা হাতে নেওয়ার পর থেকেই রিয়া ও তাঁর পরিবার নিখোঁজ। এ প্রসঙ্গে বিহার পুলিশের ডিরেক্টর গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে এক সাক্ষাৎকারে রিয়াকে সামনে আসতে অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেছেন, 'এমনিতেই এই মামলা জটিল হচ্ছে ক্রমশ। উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া আমরা কাউকে কাঠগড়ায় তুলতে চাই না, তাই সামনে আসুন।’ কিন্তু প্রমাণ পেলে কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবে না, সে যত বড়ই ব্যক্তি হোক না কেন, এমনটাই বক্তব্য গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে'র। 

 

বিহার পুলিশের একটি দল মুম্বই গিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যক্তির বয়ান সংগ্রহ করেছে। তার মধ্যে সুশান্তের প্রাক্তন প্রেমিকা অভিনেত্রী অঙ্কিতা লোখান্ডের পাশাপাশি, বন্ধু মহেশ শেট্টি, দিদি মিতু সিং রাজপুত সহ বান্দ্রার বাড়ির পরিচারিকা ও চিকিৎসকের বয়ান নেওয়া হয়েছে। এখানেই রিয়া চক্রবর্তীর আবাসনের সুপারভাইজারের কাছে পুলিশ জানতে পেরেছে, রিয়া তাঁর পরিবারকে নিয়ে তিনদিন আগে একটা বড় স্যুটকেস নিয়ে নীল রঙের গাড়ি করে চলে গেছেন। অন্যদিকে, সুশান্তের পারিবারিক বন্ধু স্মিতা পারিখ দাবি করেছেন, সুশান্তের কিছু দিন ধরেই 'প্যানিক অ্যাটাক' হচ্ছিল, সেকথা সুশান্ত তাঁকে ফোনে বলতেন।

এমনকী সুশান্ত নাকি তাঁকে বলেছিলেন, ‘ওরা আমাকে এবার আর ছাড়বে না, আমার পিছনে পড়বেই।’ এই 'ওরা' কারা তার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। অন্যদিকে, সুশান্তের নিজস্ব চিকিৎসক জানিয়েছেন, সুশান্ত বাইপোলার ডিজঅর্ডারের শিকার ছিলেন। যেখানে দুটো চরিত্রকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে রোগী। এমনকী যে কোনও সময়ে মন মেজাদ বদলে যেতে পারে। তিনি বলেছেন, ‘রিয়া একমাত্র তাঁর সঙ্গী ছিলেন, তাঁকে ভালবাসতেন ও মায়ের মতো আগলে রাখতেন।’ অন্যদিকে সুশান্তের পরিচারিকা কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন রিয়া সুশান্তের বাড়িতে প্রেতচর্চা করতেন। ফলে এই মামলায় ক্রমশ জট পাকাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × three =